আবহাওয়া অফিসে জানিয়েছে- ঘূর্ণিঝড় মোখা বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তার কাছাকাছি এলাকায় আরও উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে একই এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) সন্ধ্যা ৬টায় ৭ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে মোখা’র এই অবস্থানের (১২.১ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৭.৯ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আরও পড়ুন- ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি প্রত্যাহার
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এটি আজ সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১২০৫ কি.মি. দক্ষিণ- দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল ঘূর্ণিঝড়টি। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে ক্রমান্বয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটার এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুন- রোকাইয়াকে বাঁচাতে প্রয়োজন ৪ লাখ টাকা
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র প্রভাবে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপ ১৫ ফুটের উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ। বৃহস্পতিবার রাতে এক ফেসবুক পোস্টে এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন- চাঁদখানা ইউপি উপ-নির্বাচনকে ঘিরে জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত
পোস্টে আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক এই পিএইচডি গবেষক লিখেছেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১২০-১৫০ কিলোমিটারের বাতাস বেয়ে যাওয়ার ও ১০ থেকে ১৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এই দ্বীপের সকল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দোকানের মালামাল দোকানে রাখলে সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
পোস্টে তিনি আরও লিখেছেন, একইভাবে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া, মহেশখালী দ্বীপের উপর দিয়ে ১০০ থেকে ১৩০ কিলোমিটারের বাতাস বেয়ে যাওয়ার ও ১০ থেকে ১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিবেগের বাতাসের কারণে শরণার্থী শিবিরগুলোর ঘরের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি কক্সবাজার জেলার উপর ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে ব্যাপক বন্যা ও ভূমিধ্বসের প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।