এক বছরেই ভবন নি্রমানের শেষ হওয়ার কথা ছিল। গত তিন বছর আগে ৮৫ লাখ টাকা ব্যায়ে মাটির নীচে বরিং করলেও একাডেমিক কাঠামো এখনও শুরুই করতে পারছেন না ঠিকাদার। এটি হলো লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সম্প্রতি ঘোষিত হওয়া গোল্ডেন স্মার্ট ভিলেজের চরপাতা ইউপির গাজিনগর চরপাতা দারুহ ছুন্নাহ দাখিল মাদরাসা।
শ্রেণিকক্ষের অভাবে এখন ঝুকিপুর্ণ টিনের ঘরে চলছে পাঠদান। শিগগিরই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর। প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থীর জন্য ছোট একটি শৌচাগার আছে। নাই কোন মসজিদ ও সুপীয় পানির ব্যাবস্থা। ১৯৭০ সালে এটি প্রতিষ্ঠা হলেও ১৯৮০ সালে এমপিও হয় প্রতিষ্ঠানটি।
সরেজমিন দেখা গেছে, শিক্ষকদের ঝুকিপুর্ণ কক্ষে র পাশেই দুটি শ্রেণিকক্ষ। তার পাশেই একতলা ও তার দোতলায় দুটি কক্ষে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। এই করুন অবস্থায় ভালো ফলাফল করলেও একাধিক মেধাবী শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠান ছেড়ে বিদ্যালয়ে চলে গেছেন। চরপাতা ইউনিয়নে দুটি মাধ্যমিক স্কুল থাকলেও তারা প্রতি বছর বরাদ্ধ পায় কিন্তু একটি মাত্র মাদরাসা থাকা সত্তেও গত ২০ বছরে সরকারি কোন অনুদান পায়নি বলে জানান কর্তৃপক্ষ। গত ফেব্রুয়ারী মাসে চরপাতা ইউনিয়নকো গোল্ডেন স্মার্ট ভিলেজ ঘোষনা দিয়ে গেছেন রায়পুরের এমপি এডঃ নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন ও জেলা প্রশাসক মোঃ আনোয়ার হোছাইন আকন্দসহ প্রশাসনের ক্রতারা্খখ।।
প্রতিষ্ঠানে ঢুকতেই- দুই পাশে শিডিউল করে ঝরাজীর্ণ টিনের ঘরে ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকরা। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ৮৫ লাখ টাকা ব্যায়ে মাটির নীচে বরিং করে। তিন বছর পার হতে চললেও চরপাতা গাজিনগর দাখিল মাদরাসার কাঠামো নির্মান করছেন না ঠিকাদার। বাধ্য হয়ে ঝুকিপুর্ণ ও ঝরাজীর্ণ টিনের ঘরে নিতে হচ্ছে ক্লাস। রোদ-বৃষ্টি, এমনকি চলতি মৌসুমের তীব্র শীতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। মাদরাসার পুরোনো ভবন জরাজীর্ণ।
প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির ছাত্রী সায়মা ইসলাম, লামিয়া আক্তার, নবম শ্রেণির ছাত্রী আফিবা আক্তার, লানু আক্তার ও সুমন ইসলাম জানায়, শ্রেণিকক্ষের অভাবে ও জরাজীর্ণ ভবনের ছাদে টিনের ফুটো কক্ষের কারণে চরম কষ্টে তাদের পড়ালেখা চলছে। শীত, ঝড়-বৃষ্টির কারণে তাদের নিয়মিত পড়াশোনা ব্যাহত হয়।
মাদরাসার দাতা সদস্য দিদার হোসেন দেলু বলেন, শিক্ষকরা যেভাবে পাঠদান অব্যাহত রেখেছেন, তা একেবারেই অমানবিক। শ্রেণিকক্ষের অভাবে এক রুমে গাদাগাদি করে ক্লাস নেওয়া ছাড়াও ঝুকিপুর্ণ টিনের কক্ষে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস নিতে হচ্ছে তাদে। মাদরাসার সভাপতি-উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদও কোন ব্যাবস্থা নিচ্ছেন না।।
চরপাতা দাখিল মাদরাসা সহকারি সুপার আমির হোসেন বলেন, বারবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাগিদ দেওয়া হলেও তারা ভবন নির্মাণ কাজই শুরু করছে না। মাটির নীচে ৮৫ লাখ টাকার বরিং এর কাজ করে ফেলে রেখেছে তিন বছর। এছাড়া এ ব্যাপারে আমরা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর লক্ষ্মীপুরে প্রধান প্রকৌশলী বরাবর চিঠি দিযেছি। ১ বছরের কাজ শেষ হয়নি তিন বছরেও। এ বিষয় বরাদ্দ সংকট ও নির্মাণ সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধিকে কারণ বলে জানায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
ঠিকাদার মোঃ রাসেল বলেন, লক্ষ্মীপুরের এক ঠিকাদারের কাছ থেকে কাজটি কিনে নিয়েছি। ভবনের ড্রয়িং কপি ৬ মাস পর ঢাকা থেকে হাতে আসলে কাজ শুরু হবে। এজন্যে ভবনের কাজ দেরি হচ্ছে।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী দিপঙ্কর খিসা বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা অল্প কয়েকদিনের মধ্যে কাজ শুরু করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৫ লাখ টাকা। বর্তমানে মাদরাসাটিতে প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক-কর্মচারী ২২ জন।