রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি (টেকসই) ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণের প্রথম কিস্তি দিয়েছে। প্রথম কিস্তিতে বাংলাদেশে এসেছে ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫ হাজার ৯৪ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারী) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ওই অর্থ যোগ হয়েছে। ফলে রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২৬৯ কোটি ডলার (৩২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের প্রথম কিস্তি ৪৭৬ মিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ ব্যাংকে এসেছে। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার।
আরও পড়ুন- সমৃদ্ধ দেশ গড়তে কৃষি উন্নয়নের বিকল্প নেইঃ প্রধানমন্ত্রী
গত সোমবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আএমএফ) তাদের পরিচালনা পর্ষদে বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করে। এই ঋণ সাত কিস্তিতে ২০২৬ সাল পর্যন্ত দেওয়া হবে। এই ঋণের সুদের হার দুই দশমিক দুই শতাংশ।
গত ১৬ জানুয়ারি আইএমএফের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আন্তোয়নেট মনসিও সায়েহ ঢাকা সফর করেন। বাংলাদেশকে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে প্রাথমিক সমঝোতায় পৌঁছায় আইএমএফ।
আইএমএফ নির্বাহী পর্ষদের সভায় আরএসএফ খাতে ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ১৪০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করা হয়েছে। এছাড়া সংস্থাটি বর্ধিত ক্রেডিট সুবিধা বা বর্ধিত তহবিল সুবিধার অধীনে ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন বা ৩৩০ কোটি ডলার ঋণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বাংলাদেশকে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার জন্য আইএমএফের পর্ষদ সভায় তোলা হয়। পরে সংস্থাটি ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করে। এখন অনুমোদনের ফলে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই ঋণের প্রথম কিস্তি পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন- সেনাবহরে যুক্ত হলো তুর্কিয়ের তৈরি টাইগার মিসাইল
গত ৯ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী বলেন, আইএমএফের ঋণের অর্থ বাংলাদেশ পাবে সাত কিস্তিতে। সব ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারিতেই প্রথম কিস্তির ৪৫ কোটি ৪৫ লাখ ডলার পাওয়া যাবে। এরপর প্রতি ছয় মাস পরপর একটি করে কিস্তি দেওয়া হবে। সাত কিস্তিতে দেওয়া এ ঋণের শেষ কিস্তি পাওয়া যাবে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে। ঋণের গড় সুদ হার ২ দশমিক ২ শতাংশ।
এদিকে ঋণের কিস্তি খুব কম হলেও আইএমএফের ঋণ পেলে অন্য সংস্থাগুলোর ঋণ পাওয়াও সহজ হবে। এ কারণে সরকার আইএমএফের ঋণ দেওয়াকে গুরুত্ব দিচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ঋণ সংক্রান্ত চুক্তির সব ঠিক থাকলে ৪২ মাসের চুক্তিতে সরকারের নেওয়া ‘অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচিতে সহায়তা হিসেবে আইএমএফের এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ) এবং এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি থেকে ৩২০ কোটি ডলার ঋণ পাবে বাংলাদেশ। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনিবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় পাবে বাকি ১৩০ কোটি ডলার।
প্রাথমিক সমঝোতা অনুযায়ী শেষ কিস্তি বাংলাদেশ হাতে পাবে ২০২৬ সালে। সুদের হার হবে ২.২ শতাংশ। আর এ ঋণের টাকা দিয়ে যেসব প্রকল্প বাংলাদেশ সরকার হাতে নেবে, তার উদ্দেশ্য হবে সামষ্টিক অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখা এবং দুর্দশায় পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিয়ে দৃঢ়, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং পরিবেশবান্ধব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এগিয়ে নেওয়া।