কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তা নদীতে ভেসে উঠা চরে গো-খাদ্যের জন্য আগাম জাতের ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। তিস্তার চর জুড়ে দৃষ্টিনন্দন ভুট্টার ফলন নজর কেড়েছে সবার। মাত্র ৯০ দিনে আগাম জাতের এই ভুট্টার ফলন হওয়ায় ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় প্রায় ৫০ একর জমিতে ভুট্টার চারা রোপন করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৫শ ৬৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষমাত্র নির্ধারন করা হয়েছে।
সরেজমিন থেতরাই ইউনিয়নের জুয়ানসাতরা এলাকার তিস্তার চরে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৫০ একর জমিতে আগাম জাতের লাটসাহেব-৫৫ এবং কাবিরি-৫০ ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। ভুট্টার ফলনও হয়েছে বাম্পার।
আরও পড়ুন- মাধবপুরে জাতীয় সমবায় দিবস উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা সভা
এ সময় ভুট্টার ক্ষেতের দেখাশুনার দায়িত্বে থাকা আসাদুল ইসলাম বলেন, এ জাতের ভুট্টা মাত্র ৯০ দিনের মধ্যে সাইলেজের (সবুজ ঘাসের পুষ্টিমান অক্ষুন্ন রেখে একটি নির্দিষ্ট অম্লতায় বা ক্ষারত্বে সংরক্ষিত ঘাস) জন্য উপযোগী হয়ে উঠে। এ ভুট্টার সাইলেজে অধিক পরিমাণে প্রোটিন থাকায় গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া সহ অন্যান্য প্রাণীদের দানাদার খাবার প্রায় ৫০ থেকে ৮০% পর্যন্ত সাশ্রয় হয়। ভুট্টার সাইলেজ গো-খাদ্যের জন্য উপযোগী করে তৈরি করা হয়। যা ১ বছর থেকে দেড় বছর পর্যন্ত সংরক্ষন রাখলে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় না বলে দাবী করেন তিনি।
তিনি আরও জানান, প্রতিদিন ৪০-৫৫ জন শ্রমিক আমাদের ভূট্টার খেতে কাজ করে থাকে।
ভুট্টার চাষের উদ্যোক্তা মনিরুল ইসলাম মানিক বলেন, তিস্তা নদীর জেগে উঠা চরে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় প্রায় ৫০ একর জমির উপর গোখাদ্যের জন্য আগাম জাতের এই ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য পুষ্টি যুক্ত গো-খাদ্য সাইলেজ তৈরি করা। এ ধরনের ভুট্টা মাত্র ৯০ দিনের মধ্যে সাইলেজের জন্য উপযোগী হয়ে উঠে। এই ভুট্টা রোপন থেকে শুরু করে ঘরে তোলা পর্যন্ত ৪০ লক্ষ টাকা খরচ হবে। ভুট্টার সাইলেজ উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ১১ থেকে ১২ হাজার টন। যা বিক্রয়ের লক্ষ্য মাত্রা প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা। ১০ লক্ষ টাকা আয়ের আশা করছেন বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন- কুয়াকাটায় রাতের আঁধারে ট্রান্সফরমার চুরি করতে গিয়ে মৃত্যু
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ভুট্টার ফলন ভালো কিন্তু বর্তমানে রোগবালাই পোকামাকর দেখা দিয়েছে। নিজস্ব পদ্ধতি ব্যবহার করে পোকামাকড় নিধনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যদি উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কর্মকর্তারা এসে বিভিন্ন রোগবালাই পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার পরামর্শ দিলে আমরা অনেক উপকৃত হতাম।
থেতরাই ইউনিয়নের দায়িত্ব থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জামিল হোসেন জানান, চরাঞ্চলে যাওয়া কষ্টকর। ওই ব্লকে যাওয়ার চেষ্টা করব।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মুকিত বিল লিয়াকত বলেন, বিষয়টি আমার জানাছিল না। ওই ব্লকের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাকে অবগত করে পাঠানো হবে। এছাড়া সকল ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে।