দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্য প্রবাহ। জেলায় আজ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির বিরাজ করার কারণে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলার সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রামে তাপমাত্র ১০ এর নিচে নামায় সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সর্বপ্রকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন— নাশকতার মামলায় ফখরুল-খসরুর জামিন
এর আগে, জেলার রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এ মৌসুমে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এরকম তাপমাত্রা আরও দু-একদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ নবেজ উদ্দিন বলেন, কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রাথমিকের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির উপরে উঠলে বিদ্যালয় খোলা হবে।
জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খবর নিয়ে জানা যায়, সকাল ৮টা থেকে ক্লাস চলছিল। পৌনে ১১টার দিকে বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হলে শিক্ষার্থীদের ছুটি দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শেখ মোঃ আব্দুল মান্নান বলেন, বিদ্যালয় বন্ধের নির্দেশনা না পাওয়ায় যথারীতি পাঠদান শুরু করেছিলাম। সকাল পৌনে ১১টার দিকে চিঠি পাওয়ার পর বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন— লালমনিরহাটে শীতের দাপটে বাড়ছে রোগ ও রোগীর সংখ্যা
সম্প্রতি দেশের যেসব অঞ্চলের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে যাবে সেসব এলাকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
গত মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের জানান, চলমান শৈত্যপ্রবাহে কোনো জেলার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হবে।
সে অনুযায়ী কুড়িগ্রাম জেলায় ওই পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের এ ঘোষণা আসে।
কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলিসিয়াসের নিচে নেমে গেলে আবহাওয়া দপ্তরের ভাষায় একে শৈত্য প্রবাহ বলে। বিরাজমান তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মৃদু, ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে মাঝারি, ৪ থেকে ৬ ডিগ্রির মধ্যে তীব্র এবং ৪ এর নিচে নেমে গেলে অতি তীব্র শৈত্য প্রবাহ ধরা হয়।
আরও পড়ুন— উল্লাপাড়ায় ফুলজোড় নদীতে ভাঙ্গন, দিশেহারা নদীপাড়ের মানুষ
কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাওয়ায় কনকনে ঠান্ডার আর তীব্র শীতের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
বেলা ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রকৃতি ছিল ঘন কুয়াশায় ঢাকা। ফলে দিনের বেলায়ও যানবাহনগুলোকে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।
মাঘের শুরুতে ঘন কুয়াশার সঙ্গে হাড় কাঁপানো কনকনে ঠান্ডায় শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষজন পড়েছেন বিপাকে। টানা ৮ দিন পর গতকাল দুপুরে সূর্যের কিছুটা উত্তাপ ছড়ালেও বিকাল থেকে ফের তাপমাত্রা নিম্নমুখী হয়। এ অবস্থায় অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা চালাতে দেখা গেছে।