লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বন্যাকবলিত চরাঞ্চল রক্ষায় নির্মিত ১২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সড়কটির চরম বেহাল অবস্থা। গুরুত্বপুর্ণ এই বেড়িবাঁধের বিভিন্ন স্থানে সড়কের কার্পেটিং উঠে গর্তের সৃষ্ট হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, গত ১৬ বছর ধরে (গত তত্বাবধায়ক সরকারের পর থেকে) সড়ক সংস্কার না হওয়ায় যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন আশপাশের ৫০ গ্রামের মানুষ। তাঁদের দাবি, দ্রুত মেঘনার পাড়ের রায়পুর-লক্ষ্মীপুর-চরভৈরবি বেড়িবাঁধের সংস্কার করা হোক। সংস্কার করা হোক সড়ক।
সরেজমিন দেখা যায়, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার ৩টি ইউপির হায়দরগঞ্জ কাঠেরপুর, চমকাবাজার, হাজিমারা সুইসগেইট, মোল্লারহাট, বটতুলি, বাংলাবাজার, গাইনের ব্রীজ, খলিফারহাট, মিনাফকির, সমিতিরহাট, নতুন বেরিবাজার, কড়ই তোলাবাজার, কাঞ্চনিরহাট ও ইটেরপুল পর্যন্ত বেড়িবাঁধের সড়কের অধিকাংশ স্থানে কার্পেটিং উঠে তৈরি হয়েছে ছোট বড় খানাখন্দ। ঝুঁকি নিয়ে যানবাহনসহ মেঘনার চরাঞ্চলের দুই লক্ষ কৃষি ও দিনমজুর মানুষ চলাচল করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ৩০ বছর আগে বছর আগে মেঘনা নদী সংলগ্ন উপজেলার দক্ষিন চরবংশী, উত্তর চরবংশী ও উত্তর চরআবাবিল ইউনিয়নের বন্যাকবলিত এলাকার কৃষি ফসল রক্ষার্থে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে। দুই বছর আগে এলজিইডির তত্ত্বাবধানে বেড়িবাঁধের এই সড়ক কিছু অংশ সংস্কার করা হয়। কিন্তু সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বর্তমানে সড়কের কার্পেটিং উঠে গিয়ে ছোট-বড় খানাখন্দ তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় চরকাছিয়া গ্রামের বাসিন্দা বাবুল মোল্লা ও শহজালাল মাঝিসহ অনেকেই জানান, ‘দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে বেড়িবাঁধের সংস্কার হয়নি। তাই বাঁধ জরাজীর্ণ এবং খানাখন্দে ভরে গেছে। কর্তৃপক্ষের যেন কোনো খেয়াল নেই। তাদের উদাসীনতার কারণ আমাদের বোধগম্য নয়। এই সড়ক দ্রুত সংস্কার করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোরালো দাবি জানাই।’
চরবংশী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মনির হোসেন মোল্লাসহ কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, খানাখন্দে ভরা এই পথে প্রতিদিন শত শত ট্রাক-লরি, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করছে। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে কয়েক গ্রামের সাধারণ মানুষ, স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী। প্রতিনিয়ত সড়কের কোথাও না কোথাও ঘটছে দুর্ঘটনা। এই সড়ক দিয়ে গর্ভবতী নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের যাতায়াত করা অসম্ভব। তা ছাড়া বেড়িবাঁধ সংস্কার না করলে সামনের বর্ষায় বন্যার পানি ফসলের ক্ষতি করতে পারে।
এ ব্যাপারে দক্ষিন চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু সালেহ মিন্টু ফরায়েজি বলেন, এই বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য এলজিইডি বরাবর লিখিত দেয়া হয়েছে, কিন্তু তারা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অজুহাত দেখিয়ে গড়িমসি করছে। দ্রুত এই বাঁধ সংস্কার করা না হলে এই এলাকার বিশাল চরাঞ্চলের ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতির ঝুঁকি রয়েছে।
এলজিইডির উপজেলা সহকারি প্রকৌশলী সুমন মুন্সি বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদকে নিয়ে কয়েকমাস আগে বেড়িবাঁধ ও সড়ক আমি পরিদর্শন করে এসেছি। ইতিমধ্যে বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য লক্ষ্মীপুর-২ রায়পুরের এমপি এডঃ নুর উদ্দিন চৌধুরীর মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত বেড়িবাঁধ ও সড়কের মেরামতের কাজ শুরু করা যাবে।