খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মানস চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় এক ভূক্তভোগী।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রামগড়স্থ গৌধুলী রেঁস্তোরায় এই সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী জহর লাল ও তার স্ত্রী উমা রাণী ঘোষ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জহর লাল জানান, তার নামে উপজেলার ২৩৫নং নাকাপা মৌজায় ৩৭২/ক নং হোল্ডিং ভূক্ত ০.২০ (বিশ শতক) একর ৩য় শ্রেণির ভূমি রেকর্ডভূক্ত আছে। জমিতে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন দীর্ঘ অনেক বছর। জমির খাজনা, জমাবন্দি, হেডম্যান রিপোর্ট, ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার কানুনগো রিপোর্ট সবকিছু তারই অনুকুলে আছে। সে জমি তিনি অসুস্থতাজনীত কারনে তার স্ত্রীকে দান করতে চেয়ে ২০২১ সালে ভূমি কার্যালয়ে আবেদন করেন। যার মামলা নম্বর রামগড় ভূমি নামজারি মামলা ৩৮৩/রাম। পরবর্তীতে তার সৎ বোন নামজারী মামলার বিরুদ্ধে ভূমি কার্যালয়ে অভিযোগ দেন। অভিযোগের ভিত্তিতে দুইবার শুনানীও হয়। মামলার প্রতিবেদনের জন্য এসিল্যান্ডের কার্যালয়ে তাকে একাধিকবার ডাকা হয় এবং জনৈক প্রমথ বিহারির মাধ্যমে ৭ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। ৭ লক্ষ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় এডিএম কোর্টে তার সৎ বোনকে দিয়ে মামলা করানো হয়।
আরও পড়ুন- সরকারের পতনের মধ্যে দিয়ে রোড মার্চ শেষ হবেঃ ফখরুল
তিনি আরো জানান, মামলার পর এসিল্যান্ডের কার্যালয়ে প্রতিবেদনের জন্য গেলে এসিল্যান্ড নিজেই ৪ লক্ষ টাকা দাবি করেন এবং টাকা না দিলে ভূমিটি খাস করে দিবেন বলে হুমকি দেন। নামজারি মামলার ৩৮৩/রাম শুনানির প্রতিবেদনে মোটা অংকের ঘুষ চাওয়া ও প্রতিবেদন না দিয়ে নানা হয়রানি করার প্রতিবাদে তার এই সংবাদ সম্মেলন।
ঘুষ এবং হয়রানির অভিযোগটি উর্ধ্বতন কোন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে কিনা সাংবাদিকদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, এসিল্যান্ড তাকে বলেছেন তার বদলির আগে শুনানিটা করে দিয়ে যাবেন কিন্তু কয়েকদিন আগে তিনি জানতে পারেন এসিল্যান্ড বদলি হয়ে কয়েকদিনের মধ্যে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। এজন্য তিনি কাউকে বিষয়টি জানাতে পারেননি। তবে শীঘ্র তিনি লিখিতভাবে অভিযোগ জানাবেন।
আরও পড়ুন- জীবননগর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মানস চন্দ্র দাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অভিযোগ সম্পূর্ণ মনগড়া এবং ভিত্তিহীন। বিষয়টি সম্পূর্ণ মানবিক। জহর লাল তার বোন কে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে চায়। তার বোন অভিযোগ দিলে বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখি। তদন্তে তার বোনকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জহর লাল সংবাদ সম্মেলন করে থাকতে পারে। এটি সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতা আফরিন এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ব্যাপারটি আমি শুনেছি তবে আমি বা জেলা প্রশাসক স্যারের নিকট কোন অভিযোগ দেননি ভুক্তভোগী।’
তিনি আরো বলেন, ‘জহর লালের কাগজপত্র সঠিক নেই, ওয়ারিশগনদের বাদ দিয়েছেন। এসিল্যান্ড ব্যক্তিগত পরীক্ষা দিতে ছুটিতে ঢাকা অবস্থান করছেন। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাবো এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’