রাজধানীর শাহবাগ থানায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় ডিএমপির রমনা বিভাগ থেকে প্রত্যাহার হওয়া অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদকে জনস্বার্থে সরকারি কর্ম থেকে বিরত রাখা আবশ্যক ও সমীচীন। তাই তাকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন এর ৩৯ (১) ধারার বিধান মোতাবেক আজ ১১ সেপ্টেম্বর (২০২৩) তারিখ থেকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি পুলিশ অধিদফতরে সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।
আরও পড়ুন- ঢাকা ছাড়লেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ
এদিকে সোমবার দুপুরে ডিএমপি কার্যালয়ে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকসহ ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ। বৈঠক শেষে তিনি সংবাদিকদের বলেন, দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় হারুন অর রশিদসহ অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবে না ছাত্রলীগ। এ ঘটনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বিভাগীয় তদন্তের প্রতি আস্থা রাখতে চায় সংগঠনটি।
ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতাদের অভিযোগ, শাহবাগ থানার ইন্সপেক্টরের (তদন্ত) কক্ষে শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে মারধরে নেতৃত্ব দেন পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদ। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের অন্য নেতাকর্মীরা গিয়ে থানা থেকে আক্রান্ত নেতাদের উদ্ধার করেন।
ওই ঘটনায় রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) তাকে প্রথমে প্রত্যাহার করা হয়। পরে এপিবিএন-এ বদলি করা হয়।
আরও পড়ুন- ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ আইন’ পাসের খবরটি গুজব
পুলিশের মারধরের শিকার ছাত্রলীগের তিন নেতা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত আনোয়ার হোসেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ভুক্তভোগী নেতাদের অভিযোগ, রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হকের সঙ্গে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে ঘটনার জেরে এডিসি হারুন এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। ছাত্রলীগ নেতাদের ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন আজিজুল হক।
এদিকে এ ঘটনা তদন্তে রবিবারই তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ডিএমপি। ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনারকে (অপারেশনস) প্রধান করে গঠিত কমিটিকে দুই দিনের মধ্যে কাজ শেষ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে একটি জাতীয় দৈনিকে এডিসি হারুন ও তার পরিবারের সদস্যদের জামায়াত-বিএনপির রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। সেই ব্যাপারেও তদন্তে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।