চলতি সপ্তাহে ডিমের দাম স্থির থাকলেও বেড়েছে সব ধরনের মুরগির দাম। ক্ষেত্র বিশেষে প্রতি কেজি ২০-৫০ টাকা পর্যন্ত মুরগির দাম বেড়েছে। তবে সব ধরনের ডিমের দাম আগের মতোই রয়েছে।
শুক্রবার (৩ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। খাসির মাংসের দাম প্রতি কেজি ১১০০ টাকা। প্রতি কেজি ব্রয়লার এখন ২৪০-২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। হালিপ্রতি ডিমের দাম ৪৮-৫০ টাকা।
বেড়েছে মাছের দামও। প্রকারভেদে সাধারণ চাষের মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে প্রায় ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে ইলিশ-চিংড়ির পাশাপাশি দেশি পদের (উন্মুক্ত জলাশয়ের) মাছগুলোর দাম বেড়েছে ১০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন- রোকাইয়াকে বাঁচাতে প্রয়োজন ৪ লাখ টাকা
এছাড়াও চাষের পাঙাশ-তেলাপিয়া থেকে শুরু করে দেশি প্রজাতির সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে। আগে বাজারে প্রতি কেজি পাঙাশ বিক্রি হতো ১৫০-১৬০ টাকা, যা এখন ১৮০-২০০ টাকায় ঠেকেছে। অন্যদিকে তেলাপিয়া মাছের কেজি হয়েছে ২২০-২৫০ টাকা। যা আগে ১৮০-২০০ টাকায় কেনা যেত। প্রতি কেজি চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-১০০০ টাকায় যা আগে ছিলো ৫০০-৮০০ টাকার মধ্যে। রুই, কাতলা, মৃগেল বিক্রি হচ্ছে ৩৪০-৩৬০ টাকা কেজিতে, যা আগে ২৮০-৩২০ টাকা ছিল। দেশি প্রজাতির টেংরা, শিং, গচি, বোয়াল মাছের কেজি ৬৫০-৮০০ টাকা। যা ছিলো ৬০০-৬৫০ টাকার মধ্যে।
অন্যদিকে মুদি বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে বেড়েছে ডাল ও ছোলার দাম। প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১০০-১০৫ টাকা দরে, যা গত সপ্তাহে ৯০-৯৫ টাকা ছিলো। একইভাবে প্রতি কেজি ১০ টাকা বেড়ে বুটের ডাল ৯৫-১০০ এবং মাসকলাইয়ের ডাল ১৫৫-১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এখন পেঁয়াজের দাম কম থাকলেও কমেনি আদা-রসুনের দাম। প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ১৪০-২৮০ টাকা ও রসুন ১৬০-২২০ টাকা দরে। এছাড়া তেল, চিনি, আটা, ময়দা, গুঁড়া দুধসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আগের বাড়তি দামে আটকে রয়েছে।
এদিকে বাজারে শীতের সবজির দাম বেড়েছে ১০-২০ টাকা। আর গ্রীষ্মের যে নতুন সবজি এসেছে তাতে হাত দেওয়ার অবস্থা নেই। প্রতি কেজি বেগুন ৮০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, পটল ১২০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন- লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপারের সহযোগিতায় সেই শিশুর মায়ের সন্ধান
শ্যামলী কাঁচা বাজারের ডিম বিক্রেতা মামুন মিয়া বলেন, ‘ডিমের দাম আগের মতোই আছে। দাম বাড়েনি বরং ৫-১০ টাকা কমেছে। গত সপ্তাহে মুরগির ডিম ডজন প্রতি বিক্রি করেছি ১৪৫-১৫০ টাকা। আর এ সপ্তাহে বিক্রি করছি ১৩৫-১৪০ টাকা। আর হাঁসের ডিম বিক্রি করছি ২৩০ টাকা ডজন, কোয়েল পাখির ডিম ডজন প্রতি ১৪০ টাকা করে বিক্রি করছি।’
মোহাম্মদপুর সাপ্তাহিক বাজার করতে আসা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ইচ্ছা থাকলেও মাছ-মাংস সন্তানের মুখে দিতে পারছি না। হিসাবের বাইরে গিয়ে কিনলে, অন্য খরচে টান পড়ছে। একটা দিন যে ভালো-মন্দ খাবো এখন সেই উপায় নেই। কমদামে ব্রয়লারও এখন কেনা যায় না। মাছের দামও বেড়েছে। আমরা এখন কী খাবো? এগুলো দেখার কেউ নেই। আমাদের নিয়ে সরকার ভাবে না। আমার জীবনে সব পণ্যের দাম একসঙ্গে এভাবে বেড়ে যাওয়া কখনো দেখিনি। বাজারে এসে কোনোভাবেই পকেটের হিসাবের সাথে মিলাতে পারছি না।
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের এক বিক্রেতা বলেন, ‘এ সপ্তাহে সব ধরনের মুরগির দাম বেড়েছে। আজ পোল্ট্রি মুরগি ২৪০ টাকা, পাকিস্তানি ৩৪০-৩৬০ টাকা, লেয়ার ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। আর ডিম বিক্রি করছি ১৪০ টাকা ডজন দরে।’