তুরস্ক ও সিরিয়ায় শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৮ হাজার ছাড়িয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন প্রায় ৮০ হাজার।-বিবিসি
তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত অক্তাই স্থানীয় সময় শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) জানিয়েছেন, তুরস্কে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৬১৭, যা দেশটিতে অতীতে সংঘটিত ভূমিকম্পে মৃত্যুর সংখ্যার রেকর্ড ছাড়িয়েছে। বাকিরা নিহত হয়েছেন প্রতিবেশী সিরিয়ায়।
এর আগে, ১৯৯৯ সালে তুরস্কে সংঘটিত ৭.৪ মাত্রার এক ভূমিকম্পে ১৭ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
এদিকে দাতব্য সংস্থাগুলো বলছে, হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, বিশেষ করে সিরিয়ায়। অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারীরা ধসে পড়া হাজার হাজার ভবনের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু প্রচণ্ড ঠান্ডায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।
আরও পড়ুন- লক্ষ্মীপুরে খেলাঘরের ৩য় সম্মেলন অনুষ্ঠিত
জাতিসংঘ জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর সিরিয়ায় ৫৩ লাখের মতো মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। এছাড়া দুই দেশে ৯ লাখ মানুষের জরুরি গরম খাবার প্রয়োজন। এই ঘটনায় ৮ লাখ ৭৪ হাজার মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে ভূমিকম্পকবলিত এলাকাগুলোতে। ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপক সহিংসতা।
আরব নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে লুটপাটকারীরা বাড়ি ঘর এবং শপিংমলের দরজা জানালা ভেঙে যা পাচ্ছে নিয়ে যাচ্ছেন। তারা মূলত ভূমিকম্পের ভয়াবহ পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে এ কাজ করছে।
আরও পড়ুন- বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম কেন বেড়েছে, জানালেন প্রধানমন্ত্রী
তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ হাতায়ে পরিস্থিতি খুবই খারাপ। সেখানে লুটপাটের ঘটনায় গোলাগুলিও হয়েছে। পুলিশ ৪২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের কাছ থেকে ব্যাংক নোট, গহনা, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন এবং বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে।
পরিস্থিতি এমন অবস্থায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে অনেকে দোকান থেকে শিশু খাদ্য লুট করে নিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, অনেকে আমাদের ঘর বাড়িতে ঢুকে সামনে যা পাচ্ছে নিয়ে যাচ্ছে। এমনকি লুটপাটের হাত থেকে আমাদের গাড়িও রক্ষা পাচ্ছে না।
গত সোমবার তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপের (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটি গাজিয়ানটেপ প্রদেশের নুরদাগি এলাকা থেকে ২৩ কিলোমিটার পূর্বে আঘাত হানে। এর গভীরতা ছিল ২৪ দশমিক ১ কিলোমিটার। এ ছাড়া এ ভূমিকম্পের পর শতাধিকবার আফটারশকের ঘটনা ঘটে।