এক সময় সাইকেল চালিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সব কার্যক্রমে ছুটে চলতেন। আর এখন তিনি ছুটছেন উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ি পাজেরোতে করে। তিনি লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান খালেদ সাইফুল্লাহ।
উপজেলার চরকাদিরার আউলিয়ানগর এলাকার ৭৪ বছর বয়সী বাসিন্দা খালেদ সাইফুল্লাহ গত ৮ মে উপজেলা নির্বাচনে কমলনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ১৮ হাজার ২৩০ ভোট। এর আগে চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দুইবার দায়িত্ব পালন করেছেন খালেদ সাইফুল্লাহ।
এছাড়া লুঙ্গি পরে লঞ্চের বাইরে শুয়ে ঢাকা যেতেন তিনি। সাইকেল রেখে সেই মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ এবার পাজেরো করে যাচ্ছেন উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে। তাঁর এই বিজয় দেখে আনন্দিত স্থানীয় এলাকাবাসী।
তারা বলছেন, সাদাসিধা জীবনযাপন করা দুই বারের ইউপি চেয়ারম্যান খালেদ সাইফুল্লাহ এবার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় তারা আনন্দিত। আগে যেভাবে সাইকেল ও অটোরিকশায় করে সরকারি প্রণোদনা নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতেন সেটা যেন অব্যাহত থাকে, এমনটাই প্রত্যাশা করেন তারা।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের একজন চেয়ারম্যানের সম্মানী মাত্র দশ হাজার টাকা। তাহলে এসব জনপ্রতিনিধি কীভাবে গাড়ি-বাড়ির মালিক হন। পাশাপাশি চড়েন পাজেরো গাড়ি করে। কোথায় পান এতো টাকা। অর্থ্যাৎ দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হন চেয়ারম্যানরা। কিন্তু সেখানে ব্যতিক্রম ছিলেন খালেদ সাইফুল্লাহ। সৎ ও নিষ্ঠাবান হওয়ার কারণে ভোট দিয়ে তাঁকে নির্বাচিত করা হয়েছে। এজন্য আমরা আনন্দিত।
এদিকে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‘সাইকেল থেকে পাজেরো এটি কম কথা নয়। মানুষের ভালোবাসা নিয়ে সারাটা জীবন কাটাতে চাই। পাশাপাশি উপজেলাকে রাখতে চাই দুর্নীতিমুক্ত।’
বাংলাদেশ ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন খালেদ সাইফুল্লাহ। চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের দুইবারের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর এবার উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হন তিনি। চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ায় দল থেকে তাঁকে বহিষ্কারও করা হয়। তারপরও পিছু হটেননি খালেদ সাইফুল্লাহ। চালিয়ে যান নির্বাচনী প্রচার আর নির্বাচিতও হন তিনি।