লক্ষ্মীপুরে খোরশেদ আলম নামের এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে নার্সারি শ্রমিক ইউছুফ আলীর (৪৩) ডান চোখে আঙ্গুল ঢুকিয়ে উপড়ে ফেলার চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে। ফলে ওই শ্রমিকের চোখে গুরুত্বর জখম হয়েছে বলে জানা যায়। এসময় তার দুই-গালে বেশ কয়টি চড়থাপ্পড় মারে ওই ইউপি সদস্য। কোন কারণ ছাড়াই সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য খোরশেদ আলম ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে দাবী শ্রমিক ইউছুফ আলীর। তিনি জানান বৃদ্ধ বাবার সামনে তার চোখই কেঁড়ে নিতে চেয়েছেন ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ইউনিয়নের ভবানীগঞ্জ মধ্যবাজারে ইকবালের চা-দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ইউছুফ আলী একই ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের কালামিয়া হাজী বাড়ির নুর নবীর ছেলে। তিনি ঢাকার উত্তরায় একটি গাছের নার্সারিতে চাকরি করেন। তার ছেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় পড়ে ও ছোট ছেলে তেজগাঁও কলজে পড়ে।
ইউছুফ আলী জানান, মোটরসাইকেল যোগে তার মামা সোলাইমানের সঙ্গে ঘটনাস্থল ভবানীগঞ্জ মধ্য বাজারে চা পান করার জন্য আসেন। এসময় মোটরসাইকেল থেকে নামতে হঠাৎ ইউপি সদস্য খোরশেদ এসে তার চোখে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দেয়। এতে তার চোখে জখম হয়। কোন কারণ ছাড়াই খোরশেদ তার সঙ্গে ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম জানান, ইউছুফের কাছ থেকে আমি ১১ হাজার টাকা পাবো। টাকা চাইলে তিনি আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। এজন্য তাকে চড়-থাপ্পড় দিয়েছি। তার চোখে আঘাত করিনি।
স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক তুষার চন্দ্র মজুমদার বলেন, আঘাত পেয়ে ইউছুফের চোখ লালবর্ণ হয়। তাকে চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আমার কাছ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।
ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল হাসান রনি বলেন, ঘটনাটি লজ্জাজনক। সম্প্রতি খোরশেদের বিরুদ্ধে কয়েকটি ন্যাক্কারজনক ঘটনার অভিযোগ এসেছে। ভূক্তভোগীকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। ভূক্তভোগীকে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লক্ষ্মীপর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান হোসেন বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। এনিয়ে থানা পুলিশের কাছে ভূক্তভোগীকে অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, খোরশেদ আলম ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। সম্প্রতি তিনি ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মুরগি চুরির ঘটনায় একটি সালিসী বৈঠকে ৬ শিশুর চুল কেটে দেন ও জরিমানা করান। তখন বহিরাগতদের দিয়ে তিনি ওই শিশুদের মারধরও করান পরে ঘটনা স্থানীয়ভাবে ছড়িয়ে পড়লে টাকার বিনিময়ে মীমাংসা করা হয়েছিল বলে সেসময়ে অভিযোগ উঠে।