চট্টগ্রামের হাটহাজারীর চারিয়া এলাকায় বাস ও যাত্রীবাহী সিএনজি অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত হওয়া সাতজন চন্দনাইশ উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের একই পরিবারের সদস্য বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
ফটিকছড়ি উপজেলার নানুপুর ইউনিয়নে একটি শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন তারা। পথিমধ্যে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় সাতজন প্রাণ হারান। একই পরিবারের সাত সদস্যের মৃত্যুতে চন্দনাইশের জোয়ারা ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর ধোপা বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে হাটহাজারীর চারিয়া এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই নিহত হন সাতজন।
আরও পড়ুন—
নিহতরা হলেন- রিতা রাণী দাশ (৪০), শ্রাবন্তী দাশ (১৮), বর্ষা দাশ (১০), দ্বীপ দাশ (৩), দিগন্ত দাশ (৩), বিপ্লব দাশ (২৭) ও চিনু (বাপ্পা) দাশ (৩২)। তাদের মধ্যে রিতা রাণী ওমান প্রবাসী নারায়ণ দাশের স্ত্রী। শ্রাবন্তী ও বর্ষা তাদের মেয়ে এবং দ্বীপ ও দিগন্ত তাদের জমজ ছেলে। এছাড়া বিপ্লব দাশ নারায়ণের বড় ভাইয়ের ছেলে এবং চিনু দাশ তার জেঠাতো বোন।
চন্দনাইশ উপজেলার জোয়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, নিহত গৃহবধূ রিতা রাণীর বাবার বাড়ি ফটিকছড়ি উপজেলার নানুপুর ইউনিয়নে। আজ (মঙ্গলবার) সকালে তিনি তার ঠাকুরমার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। তার সঙ্গে পরিবারের অন্যান্যরা যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে হাটহাজারী এলাকায় তারা দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।
তিনি বলেন, নিহতরা সবাই আমার এলাকার। আমি ঘটনার কথা শুনে সকাল থেকে নিহতদের বাড়িতে রয়েছি। তাদের মরদেহ এখনো এলাকায় পৌঁছেনি। পুরো এলাকায় শোকের মাতম চলছে। এলাকার সবাই খবরাখবর নিতে আসছেন।
আরও পড়ুন—
নাজিরহাট হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুইটি জব্দ করা হয়েছে। নিহতদের মরদেহ আইনিপ্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। এ ঘটনায় হাটহাজারী থানায় মামলা দায়ের করা হবে। এখনো বাসচালক এবং অটোরিকশাচালককে পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি নূরে আলম মিনা বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে জানান, দুপুর পৌনে ১২টার দিকে খাগড়াছড়ি থেকে চট্টগ্রাম আসছিল মারসা পরিবহনের একটি বাস। কিন্তু চারিয়া এলাকায় হাটহাজারী থেকে ফটিকছড়িগামী যাত্রীবাহী সিএনজি অটোরিকশাটির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। দ্রুতগতির বাসের সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে সিএনজি অটোরিকশাটি অনেক দূরে ছিটকে গিয়ে পড়ে। সিএনজির আরোহীরা রাস্তার ওপর আছড়ে পড়ে। এ সময় সাতজন নিহত হয়। তারা সবাই সিএনজির আরোহী ছিলেন। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দু’জন।
আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।