রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি :
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে অবশেষে গুম হওয়া সেই বৃদ্ধ মোহাম্মদ উল্লাহকে (৬৮) নীজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। পুলিশ সুপারের নির্দেশে গত ৪দিন পর অভিযুক্ত চার ছেলে ঢাকার অজ্ঞাত স্থান থেকে রোববার রাতে (২৪ জুলাই) তাদের পিতাকে নিয়ে আসে। এঘটনায় গ্রামবাসির মাঝে এখনো ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। উল্লেখ্য- “সম্পত্তির লোভে বাবাকে গুম করলো ছেলেরা” অভিযোগ গ্রামবাসীর” শিরোনামে শনিবার শীর্ষ সংবাদে প্রকাশিত হয়। এতে তোলপাড় শুরু হয় প্রশাসনে।।
তবে বৃহস্পতিবার রাত ( চারদিন ধরে) খামারি বৃদ্ধকে কোথায় রাখা হয়েছে, কেন রাখা হয়েছে ও মারধর করা হয়েছে কি না এবিষয়ে ক্ষতিগ্রস্থ বৃদ্ধ ও চার ছেলে মাসুদ আলম, আলমগীর হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, উজ্জ্বল হোসেন এবং স্বজনরা সঠিক উত্তর দিতে পারছে না।
পুর্বচরবংশির ইউপি মেম্বার মহিউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, মোহাম্মদ উল্লাহ তাঁর স্ত্রী, ৪ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে বসবাস করতেন। তার কৃষি জমি ও ২ কোটি টাকার ১৫টি গরুর দুগ্ধ খামারসহ তিন একর সম্পদ রয়েছে। ৪ ছেলের সবাই পরিবার নিয়ে পৃথক বসবাস। সন্তানদের দাবী তাদের পিতা জিবিত অবস্থাতেই সম্পদের বন্টন হতে হবে। তবে পিতার বক্তব্য, জীবিত থাকা অবস্থা কোনো বন্টন হবে না। আমাদের সন্দেহ এ জমির বিরোধ নিয়েই বৃহস্পতিবার রাত ৩টার সময় ছেলেরা সবাই মিলে বৃদ্ধ মোহাম্মদ উল্লাকে হাত, পা, মুখ বেঁধে পাগল ও মাদক সেবী সাজিয়ে প্রচারনা চালিয়ে একটি সাদা রং মাইক্রোবাসে করে অজ্ঞাত স্থানে তুলে নিয়ে যায়। ঘটনাটি জানাজানি হলে গ্রামবাসি গাড়িটি প্রতিরোধের চেষ্টা করলে ইব্রাহীম ও সবুজকে পিটিয়ে আহত করা হয়।। এসময় বৃদ্ধকে খুঁজে বের করে দিতে গ্রামবাসিরা উত্তেজিত হয়ে বৃদ্ধর বসতঘরের কয়েকটি স্থানে কুপিয়ে ক্ষত করেছে। এসময় হাজিমারা ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এঘটনায় বৃদ্ধ’র স্ত্রী রোকেয়া বেগম বলেন, তার স্বামী ভালো লোক না। ২৫ বছর বিদেশ করে এবং কোটি টাকা গরুর খামারের সকল আয় সে নীজেই একা ভোগ করে আসছেন। সেই সাথে আমাকে কাজের মহিলার মত ব্যাবহার করতো সে। তাই বাধ্য হয়ে তাকে (মোহাম্মদ উল্লাহ) রাতে-আঁধারে কেন হাত বেঁধে ঢাকায় নিয়ে গিয়েছিলো।
গ্রামবাসীরা জানান, ছেলেরা কর্তৃক তাদের বৃদ্ধ বাবাকে গুম করার ঘটনাটি গ্রামবাসি রায়পুরের হাজীমারা ফাঁড়ি পুলিশকে জানালে প্রতিকার না হওয়ায় ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করে বিষয়টি অবহিত করলে তারা থানার ওসিকে ব্যবস্থা নিতে বলেন।
রায়পুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শিপন বড়ুয়া জানান, ছেলেরা তাদের বৃদ্ধ বাবা মোহাম্মদ উল্লাহকে চিকিৎসার জন্য রাতে ঢাকায় নিয়েছিলেন। সুস্থ করে তাকে রোববার রাতে বাড়িতে নিয়ে এসেছে তার ছেলেরা।