কুড়িগ্রামে ভুরুঙ্গামারীতে এক ছাত্রকে নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রের বাবা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে উপজেলার দারুল উলুম আশরাফিয়া মাদ্রাসার পরিচালক ও প্রধান শিক্ষক মুফতী মতিউর রহমান ও তার সহযোগী মুফতী সাইফুল্লার নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। নির্যাতনের শিকার আহত মাদ্রাসা ছাত্র শামীম হোসেন বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
বুধবার (১১ অক্টোবর) অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভুরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রুহুল আমিন।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে উক্ত মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। সেদিন সন্ধ্যায় উত্তেজিত জনতা অভিযুক্ত মতিউর রহমানের শাস্তির দাবিতে ওই মাদ্রাসা ঘেরাও করেন। শামীম হোসেন (১৫) মাদ্রাসার উর্দু ফার্সি কিতাবখানা বিভাগের ছাত্র।
আরও পড়ুন— সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ক্ষমতার শতভাগ প্রয়োগ করবে ইসি
জানা গেছে, ঘটনার দিন বিকালে শামীম মোবাইলে ইসলামি বক্তাদের ওয়াজ দেখছিল। মোবাইল দেখার অপরাধে মতিউর রহমান শামীমকে বেধড়ক পিটুনি দেন। এতে শামীমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়। এরপর তিনি সাদা স্ট্যাম্পে শামীমের স্বাক্ষর নেন এবং এ ঘটনা কাউকে জানালে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করার ভয় দেখান।
শামীম গোপনে তার এক খালার বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি জানায়। পরে খবর পেয়ে শামীমের বাবা-মা এসে তাকে ভুরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। শামীমকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার সময় স্থানীয়রা নির্যাতনের বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষিপ্ত হয়ে মাদ্রাসা ঘেরাও করে মতিউর রহমানের শাস্তি দাবি করেন। মতিউর রহমান অবস্থা বেগতিক দেখে পালিয়ে যান। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।
আরও পড়ুন— বঙ্গবন্ধুর দেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে নাঃ প্রধানমন্ত্রী
অভিযুক্ত মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মাদ্রাসায় পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের সামান্য কারণে নির্যাতন ও সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে রাখা এবং মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কারের ভয় দেখানো সহ আরো অভিযোগ রয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ড. এএসএম সায়েম জানান, শামীমের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম ফেরদৌস বলেন, ‘শিক্ষকের নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’