জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার ফিরিয়ে দিতে পেরেছি। আজকে যখন সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনগুলো করছি তখনই আবার নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন হয়। এর অর্থটা কী?’
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদের ২৪তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে দেখি নির্বাচনের স্বচ্ছতা এবং নির্বাচন নিয়ে সবাই খুব সোচ্চার। কিছু দেশ আমাদের দেশের নির্বাচন আর অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে কথা বলছে। সেসব দেশের কাছে আমার প্রশ্ন, ১৯৭৫ সালের পর বারবার যে নির্বাচনগুলো হয়েছিল সেই ১৯৭৭ সালে ‘হ্যাঁ/না’ ভোট বা রাষ্ট্রপতি ভোট, ১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচন, ১৯৮১ সালের নির্বাচন, ১৯৮৬ সালের নির্বাচন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অথবা ২০০১ সালের নির্বাচনে যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও অত্যাচার-নির্যাতন, সেসময় তাদের চেতনা কোথায় ছিল? সেসময় তাদের বিবেক কি নাড়া দেয়নি?’
আরও পড়ুন- জনগণ আবার সুযোগ দিলে গ্রামে একটা রাস্তাও কাঁচা থাকবে নাঃ প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ পর পর তিনবার নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকারে এসেছে, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতি করছে। আওয়ামী লীগের আমলে এ পর্যন্ত যত নির্বাচন হয়েছে সবগুলো স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। এরচেয়ে বেশি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন বাংলাদেশে কবে হয়েছে? বা পৃথিবীর কোন দেশে হয়ে থাকে? অনেক দেশের নির্বাচন তো এখনো তাদের বিরোধীদল মানেইনি, এরকমও তো ঘটনা আছে। তারপরও আমাদের দেশের নির্বাচন নিয়ে অনেকের অনেক ছবক শুনতে হচ্ছে।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘জনগণের ভোটের অধিকার, জনগণের ভাতের অধিকারের জন্য আন্দোলন করেছি আমরা। রাজপথে ছিলাম, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য রক্ত দিয়েছি। সেই রক্তে রঞ্জিত শহীদের তালিকা দেখলে আমাদের আওয়ামী লীগের এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নামের তালিকাই পাওয়া যাবে। সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মানুষের যে ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার ফিরিয়ে দিতে পেরেছি সেটাই সবচেয়ে বড় কথা। আজকে যখন সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনগুলো করছি তখন আবারও নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন হয়। এর অর্থটা কী?’
আরও পড়ুন- ২০২৫ সালের মধ্যে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুঃ প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যখন বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তখনই নির্বাচনটা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এখন তো উত্তরবঙ্গে কোনো মঙ্গা নেই। গত ১৫ বছরের কাছাকাছি সময়ে একদিনের জন্যও তো মঙ্গা হয়নি। মানুষের তো খাদ্যের অভাব হয়নি। আমরা তো দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। তার শুভ ফলটা তো তৃণমূলের মানুষও পাচ্ছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা সাফল্য দেখাতে সক্ষম হয়েছি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা কথা দিয়েছিলাম শতভাগ বিদ্যুৎ দেবো, ঘরে ঘরে আলো জ্বালবো। আমরাতো জ্বালতে পেরেছি। যদিও এরমাঝে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, স্যাংশনস, কাউন্টার স্যাংশনস, তার আগে গেল কোভিডের অতিমারি, যেখানে সারাবিশ্ব হিমশিম খাচ্ছে, তারপরও এটুকু বলতে পারি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি হচ্ছে। আমরা তো পিছিয়ে নেই।’