শরীয়তপুর শহরের উপর নিরাপত্তা ব্যবস্থা না রেখেই চলছে বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ। যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। এমন আশংকা পথচারী ও স্থানীয়দের।
বুধবার (২ আগষ্ট) সকাল ১১ টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌরসভার শান্তিনগর ১ নং ওয়ার্ডে সাবেক মেয়র মরহুম নুরু মোহাম্মদ কোতোয়ালের বাড়ির পাশে নির্মাণ হচ্ছে ৭ তলা ভবন। ভবনের একপাশে সানসেটে পাতলা নেট দেয়া থাকলেও তাতে উপর থেকে ইট, বালু পরে একেক জায়গায় ছিঁড়ে গেছে। নির্মাণকৃত ভবনের পাশেই রয়েছে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। প্রতিনিয়ত এই সড়কে চলাচল করে স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থী সহ নানান শ্রেনী পেশার মানুষ।
পথচারী মিলন খান বলেন, ‘এতো টাকা খরচ করে বিল্ডিং করতে পারে। আর জনগণের সেফটির জন্য ব্যবস্থা নিতে পারে না কেন? তাদের উচিত এখানে সিফটির ব্যবস্থা করা ‘
রিক্সা চালক আজাহার বলেন, ‘এখানে একটা জালজুল দিয়া রাখলে ভালো হতো। তাইলে ইট-উট পরতো না। পইরা গেলেতো আমরাও শেষ, যাত্রীও শেষ হইয়া যাইব।’
আরও পড়ুন- অক্টোবরে নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্রঃ পিটার হাস
শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা আঃ মান্নান বলেন, ‘সড়কের এই পাশে অবশ্যই সেফটি দেয়ার একান্তই প্রয়োজন ছিল। এটা সবাই বলবে। কারণ ভবনেরর উপর থেকে একটা ইট অথবা বাঁশ খসে পরতে পারে। কি জন্য দেয় নাই তা বলতে পারবো না।’
স্থানীয় সম্ভু প্রসাদ চৌধুরী বলেন, ‘এটা মেইন রোড, এখান দিয়ে সব সময় মানুষ যাতায়ত করে, পাশেই একটা স্কুলও আছে। অবশ্যই এখানে সেফটি দিয়ে কাজ করা উচিত। এখান থেকে একটা ইটের কণাও যদি মাথায় পরে তাহলে মৃত্যু নিশ্চিত। এতো বড় একটা রিস্ক নিয়ে কাজ করছে। তারা বুদ্ধিমানের মতো কাজ করতেছে না। এজন্য আমি তাদের আইনের আওতায় আনার অনুরোধ করছি।’
স্থানীয় যুবক জিসান বলেন, ‘এখানে সেফটির বিষয়টা আরো ভালো ভাবে করতে পারতো। যে কোন সময় এখানে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই রাস্তা দিয়ে অনেক মানুষ যাতায়ত করে। একটা স্কুলও রয়েছে। দূর্ঘটনা তো বলে কওয়ে আসে না। রাস্তাটার অবস্থাও খুব খারাপ হয়ে থাকে। একটু বৃষ্টি এলেই পানি কাঁদা হয়ে যায়। আমার বাবা অসুস্থ রোগী, তাকে নিয়ে রিক্সায় করে ভেতরে ঢুকতে পারিনা।’
জিসান আরও বলেন, আমাদের এই খানে অন্যান্য বিল্ডিং গুলো আগে হয়েছে। আমরা যারা আগে বিল্ডিং করেছি তারা সাবাই রাস্তার জন্য জায়গা রাখছি। নতুন করে উঁচুতলা বিল্ডিং করতে রাস্তাটা ডাউন হয়ে গেছে। আমাদের কথা ছিলো, সামনের দুইটা বিল্ডিংয়ের অল্প-অল্প করে একটু জায়গা রাখলে একটা গাড়ি ঢুকতে পারতো। এখানে কেউ অসুস্থ হলেও একটা এম্বুলেন্স ঢুকতে পারবে না।’
আরও পড়ুন- দেশের মানুষ এখন শান্তিতে ভোট দিতে পারেঃ প্রধানমন্ত্রী
নির্মাণাধীন ৭ তলা ভবনে গিয়ে জানা যায়, ভবনটি সাজনপুর সমিতি থেকে করছে। এরা সবাই ইটালি প্রবাসী। এখানে দায়িত্বে রয়েছে হারুন নামের এক ব্যক্তি
এব্যাপার হারুনকে ভবন নির্মানে সেফটি রাখা হয় নাই, এলাকাবাসীর অভিযোগ রয়েছে জনালে তিনি বলেন, ‘সিক্স স্টার গ্রুপ ভবন নির্মাণ করছেন। এরা ১৯ জন ইটালি প্রবাসী। আমি এই ভবনের কোন দায়িত্বে নাই। ছোট ভাই ব্রাদার তাই মানবিক কারণে দেখে রাখি। ঠিকাদার জাকির মিস্ত্রী, তাকে বলেছি। তিনি বলেছেন, ঢালাই কাজ শুরু হলে শুক্র-শনিবার ঠিক করে দিবে।’
এ বিষয়ে ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর বেপারি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কাছে একাধিক অভিযোগ এসেছে। হারুণ ভাইর সাথে কথা বলেছি। সে এই বিষয়ে দেখবেন বলে আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন।’
সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, ‘আপনারা জানেন, যে কোন নির্মাণ কাজ করতে গেলে জনসাধারণের যে সেফটির বিষয়টি আছে তা নিশ্চিত করেই, ঠিকাদার ও মালিক পক্ষকে কাজ করতে হবে। আমরা জানতে পেরেছি, এখানে কোন রকম সেফটি না রেখে ৭ তলা ভবনের কাজ করছে। আমরা উপজেলা প্রাশাসনের পক্ষ থেকে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’