জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। সেই অনশন ভাঙালেন বকশীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগর।
শনিবার (১৫ জুলাই) বকশীগঞ্জ সর্বস্তরের সাংবাদিক ও সচেতন নাগরিকের ব্যানারে সকাল ১০ থেকে উপজেলা পরিষদের সামনে এই কর্মসূচি পালন করে উপজেলার কর্মরত সাংবাদিকরা। পরে বেলা দেড়টার দিকে বকশীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগরের আশ্বাসে ফলের জুস পান করিয়ে দিলে অনশন ভাঙ্গেন আন্দোলনরত সাংবাদিকদের।
অনশনে সাংবাদিক শাহিন আল আমিন, মেলান্দহ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মোঃ শাহজামাল, সাংবাদিক আশরাফুল হায়দার, সাংবাদিক এমদাদুল হক লালন, সাংবাদিক জিএম বাবু, সাংবাদিক মাসুদ উল হাসান, সাংবাদিক রাশেদুল ইসলাম রনি, একেএম নূর আলম নয়ন, মতিন রহমানসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা বক্তব্য রাখেন।
এসময় সাংবাদিকরা তাদের বক্তব্যে বলেন, সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যার ১ মাস পার হলেও এজাহারভুক্ত ১৭ আসামি ধরাছোঁয়ার বাইরে। এজাহার ভুক্ত বাকী ১৭ আসামি দ্রুত গ্রেফতার করা না হলে অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি নেওয়া হবে ।
এদিকে অনশনকালে সিনিয়র সাংবাদিক জিএম সাফিনুর মেজর অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এ বিষয়ে বকশিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগর বলেন, জানতে পারি আমার এই অঞ্চলের সাংবাদিকরা নাদিমের হত্যার বিচার ও বাকি আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে উপজেলার সামনে অনশন করছেন। পরে আমি থানার ওসির সাথে কথা বলি। ওসি আমাকে আশ্বাস দেন বাকি আসামি ধরার জন্য ও আমাদের কাছে সহায়তা চান। এই বিষয়টি আমি অনশনরত সাংবাদিকদের বুঝিয়ে বলি। তারা পরে পানীয় পান করে অনশন ভাঙেন।
আরও পড়ুন- এক যুগ পর টিআর প্রকল্পের আত্মসাৎ কৃত টাকা আদায়
তিনি আরও বলেন, নাদিম আমাদের এখানকার নির্ভীক সাংবাদিক ছিলেন। তাকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তা মেনে নেওয়ার মতো না। আমিও চাই এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার হোক এবং সকল আসামিরা গ্রেফতার হোক।
এর আগে বুধবার (১৪ জুন) রাতে বাড়ি ফেরার পথে বকশীগঞ্জের পাথাটিয়ায় পৌঁছালে অস্ত্রধারী ১০ থেকে ১২ জন দুর্বৃত্ত সাংবাদিক নাদিমকে পিটিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এরপর রাত ১২টায় সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৩টার দিকে তিনি মারা যান।
এই ঘটনায় নিহত সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে প্রধান আসামি করে নামীয় ২২ জন ও অজ্ঞাত নামা আরো ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে বকশীগঞ্জ থানায় মামলা করেন।