উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বর্তমানে ব্যারেজ পয়েন্টে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যা সকাল ৬টায় বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রেখেছে ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (০৮ জুলাই) সকাল ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছিল ৫২ দশমিক ২৮ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। তবে সকাল ৯টায় কমে ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল।
আরও পড়ুন- ফিরে দেখা ২০২২ঃ উলিপুরে তিস্তা-ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে স্বস্তি ছিলো না বছরজুড়ে
ব্যারাজ পয়েন্টের ভাটিতে লালমনিরহাটের তিস্তার চরাঞ্চল ও তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলোতে নদীর পানি প্রবেশ করায় তীর ও চরাঞ্চলে অন্তত হাজার খানেক পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। পানি ঘরবাড়িতে না ঢুকলেও, নদী তীরবর্তী লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, সিংগীমারী ও সিন্দুর্না, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এলাকাবাসী ধারণা করছে, পানিতে যেকোনো সময় বসতবাড়ি তলিয়ে যেতে পারে।
চর সিন্দুর্নার আহসানুল করিম হোসেন বলেন, তিস্তা নদীর পানি রাত থেকে বৃদ্ধি পাচ্ছে। চরের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করছে। চলাচলের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। সিন্দুর্না ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মফিজার রহমান বলেন, তিস্তায় গত চারদিন কোন পানি ছিল না আজ হঠাৎ রাত থেকে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি ক্রমেই বাড়ছে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার কালমাটি এলাকার সুলতান জানান, সকালে নদীর পানির স্রোত বেশি থাকায় তার নৌকা ডুবে যায়। পরে অনেক খুঁজেও আর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন- কুড়িগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও তা আরও কমে সকাল নয়টায় ৫ সেন্টিমিটারে নেমে গেছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, ‘উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপরে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আমাদের পক্ষ থেকে তিস্তাপাড়ের মানুষকে সর্তক করা হচ্ছে। আমরা সকল পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর রাখছি। এর পাশাপাশি সব ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত আছি।’