ফরিদপুরের ভাঙ্গায় হাইওয়েতে দুর্ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্সে লাগা আগুনে দগ্ধ হয়ে ৭ জনের প্রাণহানির পর মারা গেলেন তার চালক মৃদুল মালো (২৫)।
শনিবার (২৪ জুন) বিকেল ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত মৃদুল মালো ফরিদপুর শহরের গুহলক্ষ্মীপুর এলাকার তকি মোল্যা সড়কের সুভাষ চন্দ্র মালোর ছেলে।
এর আগে এই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই অ্যাম্বুলেন্সের ৭ যাত্রীর মৃত্যু হয়। দরজা খুলে কোনোমতে বের হতে পারেন চালক। তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অবস্থার অবনতি হলে বিকেল ৩টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকাল ৫ টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
এর আগে শনিবার (২৪ জুন) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার মালিগ্রামে অ্যাম্বুলেন্সের সামনের চাকা ফেটে যায়। এসময় অ্যাম্বুলেন্সটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের রেলিংয়ে সজোরে ধাক্কা লাগে। এতে সঙ্গে সঙ্গেই আগুন ধরে যায় অ্যাম্বুলেন্সটিতে।
এসময় আগুনে দগ্ধ হয়ে অ্যাম্বুলেন্সের ৭ যাত্রী ঘটনাস্থলেই মারা যান। গুরুতর অবস্থায় চালককে উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন- এক্সপ্রেসওয়ের রেলিংয়ে ধাক্কায় মাইক্রোবাসে আগুন, নিহত ৭
এ দুর্ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্সচালকসহ নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৮ জনে। নিহতদের তিনজন পুরুষ, তিনজন নারী ও দুই শিশু।
চালক ছাড়া বাকি নিহত ৭ জন হলেন- বোয়ালমারীর ফেলাননগর গ্রামের আজিজার শেখের স্ত্রী তাসলিমা বেগম (৫০), মেয়ে কমলা (৩০) ও আলফাডাঙ্গার বিউটি (২৬), নিহত কমলার ছেলে আরিফ (১২), আফসা (১), এবং হাসিব (১০) এবং নিহত বিউটির ছেলে মেহেদী (১০)।
উল্লেখ্য, গত ১৯ মার্চ ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণে হারিয়ে প্রাণ হারান ১৯ জন।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ জিয়ারুল ইসলাম বলেন, সকাল ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঢাকা থেকে ফরিদপুরের দিকে যাচ্ছিলেন ওই অ্যাম্বুলেন্সের যাত্রীরা। দ্রুতগামী অ্যাম্বুলেন্সটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফ্লাইওভারের রেলিংয়ে ধাক্কা লেগে মুহূর্তেই আগুন ধরে যায়। এতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা ৭ যাত্রী ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
ফরিদপুর হাইওয়ে পুলিশের মাদারীপুর রিজিওনের পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্সের সামনের অংশে আগুন ধরে যায়।
ফায়ার সার্ভিস ভাঙ্গা স্টেশনের ইনচার্জ আবু জাফর বলেন, খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। এসময় গাড়িটি জ্বলছিল। ভেতরেই নারী-শিশুসহ ৭ জন মারা গেছে। গাড়িটির সামনের অংশে আগুন ধরে গিয়েছিল। রেলিংয়ে ধাক্কা লেগেই আগুন ধরে যায়। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে গাড়ির ভেতর থেকে সাতজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।