হবিগঞ্জের মাধবপুরে চাঞ্চল্যকর শিব লিঙ্গ ভাংচুর নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২৬ মার্চ রবিবার রাতে তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের দুর্গা কালী মন্দিরের পাশে থাকা একটি বট বৃক্ষের নিচে চারদিকে দেয়াল বেষ্টিত অষ্টনাগের নিচে শিব লিঙ্গ ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তেলিয়াপাড়া চা-বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি খোকন তাঁতী জানান, সোমবার সকালে মন্দিরের পূজারি শিব লিঙ্গে পুজা দিতে গেলে ভাংচুরের ঘটনা দেখতে পান, তখন প্রশাসনকে জানানো হয়।
তিনি আরও জানান, এটা একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা, ১০০ বছরের ভিতরে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি, তবে শিব দুর্গা মন্দিরের সিসি ক্যামেরায় দেখা যায় রাত ১২ টা ১১ মিনিটে ৬ জন লোক মন্দিরের রাস্তা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে এবং আধা ঘন্টা পর আবার বেরিয়ে যায় কিন্তু তাদের চেনা যায়নি।
আরও পড়ুন- ভোটে সংবাদকর্মী-পর্যবেক্ষকদের বাধা দিলে ২-৭ বছরের কারাদণ্ড
উৎসব কমিটির সভাপতি নিরোধ তাঁতী বলেন, কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা জানেননি। ঘটনার দিন রাত ১০ টায় নামকির্তন উৎসবের মিটিং শেষে বাড়িতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন, পরদিন সকালে মন্দিরের পুজারী ভাংচুরের ঘটনা দেখতে পেয়ে তাদের জানালে, তারা প্রশাসনকে খবর দেন এবং পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জিডি করার পরামর্শ দিলে তিনি দুপুর ২ টার দিকে থানায় জিডি করে আসেন।
কি ধররের অভিযোগ করেছেন এমন প্রশ্নে সাংবাদিক জিডির কপি দেখতে চাইলে নিরোদ তাঁতী বিভিন্ন অযুহাতে সংবাদকর্মীর আড়ালে চলে যান। পরে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তেলিয়াপাড়া চা-বাগান সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের সভাপতি কনক অধিকারী জানান, সিসি ফুটেজে দেখা যায় রাত সোয়া ১২ টার দিকে ৬ জন লোক মন্দিরের প্রবেশ করে কিন্তু কিভাবে তারা শিব লিঙ্গ ভাংচুর করে তা দেখা যায়নি। তিনি ঘটনার সাথে জরিত অপরাধীদের শাস্তি দাবি করেন।
আরও পড়ুন- স্বাধীনতা দিবস : কবিতা আবৃত্তি করে ১ম রাফিয়া
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, দুর্গা কালী মন্দিরের চার দিকে সিসি ক্যামেরা থাকলেও শিব লিঙ্গ এরিয়ার সিসি ক্যামেরাটি নষ্ট।
এদিকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের খবর পেয়ে হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী, মাধবপুর-চুনারুঘাট সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নির্মলেন্দু চক্রবর্তী, উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুর আহ্সান, ওসি মোঃ আব্দুর রাজ্জাক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ওসি মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করতে পুলিশ সক্রিয় রয়েছে। তবে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার মূল রহস্য জানা যাবে।
ওসি (তদন্ত) আতিকুর রহমান জানান, তেলিয়াপাড়ার শিব লিঙ্গ ভাংচুরের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। বিষয়টি খুবই সেনসিটিভ তাই পুলিশ পুঙ্খানুভাবে তদন্ত করছে।
মাধবপুর-চুনারুঘাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নির্মলেন্দু চক্রবর্তী জানান, হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী সহ তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন, এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্তা নেওয়া হবে।