প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি সরকার যখনই ক্ষমতায় এসেছে, দেশের সম্পদ লুট করেছে। সেই সম্পদ বিদেশে পাচার করে এখন আরাম-আয়েশে দিন কাটাচ্ছে। আর দেশের মানুষ যখন কষ্ট পায়, তখন তারা আরও কষ্ট দেয়। আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে। যারা বোমা মেরে, আগুন দিয়ে মানুষকে হত্যা করতে পারে তারা কখনো মানুষের কল্যাণ করতে পারে না। এসময় দেশকে এগিয়ে নিতে নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, একমাত্র নৌকা হলেই মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার হেলিপ্যাড মাঠে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীকে মঞ্চে দেখে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন সমাবেশে অংশ নেওয়া লাখো মানুষ। এসময় তারা নানা স্লোগান দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
আরও পড়ুন- রোকাইয়াকে বাঁচাতে প্রয়োজন ৪ লাখ টাকা
এর আগে, দুপুর ৩টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আবদুল হক নূরুর সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশ শুরু হয়। এসময় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় সমাবেশ স্থল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত বা ২০ দলীয় জোট যখনই ক্ষমতায় এসেছে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। আর আওয়ামী লীগ জাতির পিতার হাতে গড়া সংগঠন। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে দেশের মানুষের কল্যাণ হয়, ফসল উৎপাদন বাড়ে, মাছ উৎপাদন বাড়ে, তরিতরকারী-ফলফুল উৎপাদন বাড়ে, মানুষ খেয়ে পড়ে সুখে থাকে, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, গত ১৪ বছরে আজকের বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বে মর্যাদা পেয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আপনাদের কাছে আমার আহ্বান নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। আগামীতে একমাত্র নৌকা মার্কার সরকার আসলেই আপনাদের উন্নতি হবে, দেশের উন্নতি হবে। এই হাওর অঞ্চলে আমরা যে উন্নয়ন বাস্তবায়ন করছি, তা অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন- প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষার ফল স্থগিত
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, পিছিয়ে পড়া হাওরে এখন উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। এজন্য হাওরের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আবারও নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে হবে। এ সময় সমাবেশে উপস্থিত জনতার কাছ থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেওয়ার ওয়াদা আদায় করে নেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী কিশোরগঞ্জের মানুষের প্রশংসা করে বলেন, এই কিশোরগঞ্জ তিন জন রাষ্ট্রপতির জেলা। মুক্তিযুদ্ধের সময় অস্থায়ী সরকারের প্রধান ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম। রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ও আবদুল হামিদ এই জেলার কৃতি সন্তান। আসলে কিশোরগঞ্জ সবসময় রাষ্ট্রের প্রধান হয়ে বাংলাদেশ পরিচালনা করে আসছে।
এর আগে বেলা ১১টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ সেনানিবাসের হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে মিঠামইন উপজেলার ঘোড়াউত্রা নদীর তীরে নির্মিত এ সেনানিবাসের অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি।
এরপর রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে মিঠামইন সদরের কামালপুরে রাষ্ট্রপতির পৈতৃক বাড়িতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। দুপুর পৌনে ১টার দিকে সেখানে পৌঁছান তিনি। রাষ্ট্রপতির বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী জোহরের নামাজ শেষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে একই টেবিলে দুপুরের খাবার খান। পরে দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী মিঠামইন সদরের হেলিপ্যাড মাঠের সুধী সমাবেশ মঞ্চে উপস্থিত হন।
উল্লেখ্য, প্রায় ২৫ বছর পর কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে সফরে আসেন প্রধানমন্ত্রী। ১৯৯৮ সালের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবার মিঠামইন সফর করেন। ওই সময় আবদুল হামিদ কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য ও ডেপুটি স্পিকার ছিলেন।