কনকনে শীত, ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের মানুষ। গত কয়েকদিন ধরেই ঘনকুয়াশা আর তীব্র শীতে অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। ঠান্ডায় কাজে যেতে পারছেন না শ্রমজীবিরা। বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন ছিন্নমুল ও হতদরিদ্র মানুষজন। ব্যাহত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
আজ শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে এসেছে ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা নেই, কুয়াশায় ঢাকা পড়ে আছে প্রকৃতি। ঘন-কুয়াশায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চালাতে হচ্ছে যানবাহন।
ঠান্ডার মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সময়মতো কাজে যেতে না পাড়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবিরা। গরম কাপড়ের অভাবে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকেই। শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালসহ জেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা।
আরও পড়ুন- বিএনপির গণমিছিলঃ নয়া পল্টনে জড়ো হচ্ছেন নেতাকর্মীরা
সদর উপজেলার মোঘল বাসা ইউনিয়নের কৃষক মজিবুর হক জানান, ঠান্ডার মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। আমরা কোন কাজকর্ম করতে পারছি না। হাতপা বের করা যাচ্ছে না।
একই ইউনিয়নের জাহানারা বেগম জানান, আমরা গরীব মানুষ। গরম কাপড় নাই। খুব কষ্টে দিন পার করছি। এখন পর্যন্ত কোনো কম্বল পাই নাই। আমরা কম্বল চাই।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক তুহিন জানান, জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে অবস্থান করলে সেটাকে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বলা হয়। তবে তাপমাত্রা আরো কমতে পারে।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার শাহিনুর রহমান শিপন জানান, হাসপাতালে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর চাপ অনেকটাই বেড়েছে। বিশেষ করে ডায়রিয়া ও শিশু ওয়ার্ডে নির্দিষ্ট বেডের বিপরীতে দ্বিগুণেরও বেশি রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। বেশি রোগীর চাপে চিকিৎসা সেবা দেওয়া কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ জানান, শীতার্ত মানুষের জন্য জেলার ৯ উপজেলায় ৩৮ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।