লক্ষ্মীপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিকট একটি অতি পরিচিত নাম “রাণীর মা”। মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবধান রাখায় আজ তিনি লক্ষ্মীপুরের জীবন্ত কিংবদন্তী। ৪ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুর হানাদার মুক্ত হয়। এ উপলক্ষে তার প্রতিক্রয়া জানতে চাইলে তার অভিব্যক্তি দেখে মনে হলো,
চোখের সামনে এখনো যেন দেখতে পাচ্ছেন, পাক হানাদার বাহিনীর তান্ডবলীলা, রাজাকারদের অত্যচার, নিজের বসত ঘর পুড়িয়ে দেয়ার পর হায়েনাদের অট্টহাসি। জীবণ বাঁচাতে তিনটি অবুঝ শিশু সন্তানদের নিয়ে ছোটাছুটি…
বলছিলাম লক্ষ্মীপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে জীবণ তুচ্ছ করে নিরন্তর ছুটে চলা তাহেরা খাতুন ওরফে “রাণীর মার” কথা।
তাহেরা খাতুন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ১ নং উত্তর হামছাদী ইউনিয়নে বরই তলার বাসিন্দা। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন একই ইউনিয়নে কালিবাজারের পাশে জামতলার আনাল হক মাষ্টার বাড়ির স্বামী সানা উল্যা মাষ্টারের বসত ভিটায় থাকতেন।
তহশিল অফিসে চাকরির সুবাদে তিনি ফরিদপুর থাকতেন।
সাথে ছিলো বড় সন্তান রাণী, ও ২ ছোট্ট ছেলে শিশু।
বড় সন্তান রাণীর নামেই তিনি পরিচিতি পান ” রাণীর মা “।
তার পিতার নাম নূর মোহাম্মদ পাটোয়ারী ও মাতার নাম আমেনা খাতুন।
যুদ্ধ কালীন সময়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের ভাত রান্না-বান্না করতেন, তাদের অস্র, গোলা – বারুদ লুকিয়ে যত্ন করে রাখতেন।
মাঝে গ্রাম থেকে চাল ডাল তুলে এনে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রান্না করে রাখতেন। একস্থান থেকে মুক্তিযুদ্ধের খবরা খবর অন্য স্থানে গোপনে আদান প্রদান করতেন।
রাজাকার হানাদার বাহিনীর গতিবিধি লক্ষ্য করে তা মুক্তিযুদ্বাদের সরবরাহ করতেন।
এই মহীয়সী নারী সম্পর্কে বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, অন্য নারীদের চেয়ে তিনি ছিলেন ব্যতিক্রম। ভয়কে জয় করে তিনি তখন আমাদের সহযোদ্ধা হিসাবে কাজ করছেন। এসব কারনে তিনি হানাদার রাজাকারদের টার্গেটে পরিণত হন। তাকে ধরার জন্য, হত্যা করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছিল হানাদাররা।