ঝালকাঠি সুগন্ধা নদীতে সাগর নন্দিনী-২ জাহাজ থেকে পেট্রোল অপসারণের সময় পুনরায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৯ পুলিশ সদস্যসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণে জাহাজের তেলের ট্যাঙ্ক ফেটে তেল নদীতে ছড়িয়ে পরছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট কাজ করছে।
সোমবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঝালকাঠি পৌরসভার খেয়াঘাট সংলগ্ন এলাকায় নদীতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৯ পুলিশ সদস্যসহ ১১ জন দগ্ধ হয়েছেন।
আহতরা হলেন ঝালকাঠি পুলিশ লাইনের এসআই আব্দুল হাকিম (৪৯), কনস্টেবল পলাশ মোল্লা (২৫), কনস্টেবল সওকত (২৩) ও কনস্টেবল মনির (৩০), বরিশাল নৌ পুলিশের সদস্য মোঃ সিদ্দিক (৪৯), এটিএসআই হেলাল উদ্দিন (৪৫), সাগর নন্দিনী-৪ জাহাজের স্টাফ শরিফ উল্লাহ্ (৪০) ও বাবুর্চি কাইয়ুম (৩২), ঝালকাঠি সদর থানার ওসি মোঃ কাওসার (২৮) এবং ঝালকাঠি সদর থানার এএসআই গনেশ (৪২)।
বিস্ফোরণের পর সেখানে থাকা পুলিশ সদস্য ও শ্রমিকদের উদ্ধারের পরপরই আগুনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। সেখানে সাগর নন্দিনী-৪ নামে আরেকটি জাহাজ নোঙর করা রয়েছে। সেটিতেও আগুন ছড়িয়ে যেতে পারে। রাত সাড়ে ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সাগর নন্দিনী-২ জাহাজে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নিরাপদ দূরত্ব থেকে ফোম ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন।
আরও পড়ুন- লক্ষ্মীপুরে ট্রাক-মাইক্রোবাস মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকের মৃত্যু
বরিশাল বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে সেখানে বরিশাল সদর, ঝালকাঠি সদর, রাজাপুর, নলছিটিসহ ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট কাজ করছে। সাগর নন্দিনী-২ থেকে তেল অপসারণ করতে আসা সাগর নন্দিনী-৪ এ আগুন ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় ট্রলারের চালক রহমান বলেন, সন্ধায় আমি যখন ট্রলার ঘাটে ছিলাম ঠিক তখনই বিকট শব্দে জাহাজে বিস্ফোরণ হয়। পেছনে ফিরে দেখি জাহাজ থেকে লোকজন লাফ দিয়ে নদীতে পড়ছে।
এর আগে গত শনিবার (১ জুলাই) দুপুরে বিকট শব্দে সাগর নন্দিনী-২ জাহাজে বিস্ফোরণ ঘটে। পরে পুরো জাহাজে আগুন লেগে যায়। এতে চারজন শ্রমিক দগ্ধ হন এবং চারজন শ্রমিক নিখোঁজ হন। পরে দুই দিন অভিযান চালিয়ে নিখোঁজ চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিআইডব্লিউটি’র যুগ্ম পরিচালক ও উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভীকের কমান্ডার মোঃ সেলিম বলেন, বিআইডব্লিউটি’র চেয়ারম্যানের নির্দেশে উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভীক ঝালকাঠিতে আনা হয়। আমাদের এ উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত ডুবন্ত অংশটি ওপরে উঠাতে না পারি। অংশটি ওঠানোর পরে তার ভেতরে যদি কোনো মৃতদেহ না পাওয়া যায় তাহলে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হবে।