ময়মনসিংহ দুই স্ত্রীকে হত্যার দায়ে ফখরুল ইসলাম (৫৮) নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ফখরুল ইসলাম ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ফকিরাকান্দা বয়রা পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) দুপুরে ময়মনসিংহের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মমতাজ পারভীন আসামির উপস্থিতিতে এ আদেশ দেন।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) সৈয়দ আনোয়ারুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বরাত দিয়ে আসামিপক্ষে রাষ্ট্র কর্তৃক নিয়োজিত আইনজীবী মোকাম্মেল হক শাকিল বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে ২০১২ সালের ২৬ মার্চ বিকেলে ফখরুল ইসলাম তাঁর ঘুমিয়ে থাকা প্রথম স্ত্রী শিরিনাজ বেগমকে বটি দিয়ে জবাই করিয়া হত্যা করে। এর আগে ২০০১ সালের ১৬ আগস্ট তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী কানিজ ওরফে তানিয়াকে হত্যার দায়ে ২০০৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর যাবজ্জীবন এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাস সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। ছয় মাস সাজাভোগের পর ওই মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পান তিনি।
আরও পড়ুন- যাত্রাবাড়ীতে পুকুরের পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
ওই মামলায় তার আইনজীবীরা আসামি ফখরুলকে পাগল উল্লেখ করলে উচ্চ আদালত তাকে জামিন দেন। কিন্তু আসামি ফখরুল জামিনে বেরিয়ে এসে ২০১২ সালের ২৬ মার্চ তার প্রথম স্ত্রী শিরিনাজ বেগমকে কুপিয়ে হত্যা করেন।
শিরিনাজ হত্যার ঘটনায় তাঁর ভাই রুহুল আমিন বাদী হয়ে ২০১২ সালের ২৮ মার্চ ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় পুলিশ ওই বছরের ২২ আগস্ট ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এরপর ফখরুলকে তার আইনজীবীরা আবারও পাগল দাবি করলে আদালত মেডিকেল বোর্ড গঠন করে আসামির শারীরিক অবস্থা আরও নিশ্চিত হতে ফখরুলকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে পাঠালে সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে সুস্থ দাবি করে ফেরত পাঠান।
আরও পড়ুন- তালা উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির আটক
মামলায় ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত অবস্থায় জামিনে মুক্তি পেয়ে ফখরুল দ্বিতীয়বার একই ধরনের অপরাধ করায় ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি ৩০৩ ধারায় আসামি ফখরুলকে ফাঁসির রায় ঘোষণা করেন। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কিনা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
প্রসঙ্গত রাষ্ট্রপক্ষে আলোচিত এ মামলাটি পরিচালনা করেন সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর বীর মুক্তিযোদ্ধা কবীর উদ্দিন ভূঁইয়া এবং আসামিপক্ষে রাষ্ট্র কর্তৃক নিয়োজিত আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মোকাম্মেল হক শাকিল।