মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ অব্যাহতভাবে সাফল্য অর্জন করে যাচ্ছে। নতুন নতুন নানামুখী উদ্ভাবন এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে। সফলতা ধরে রেখে ২০৪১ সালে মাছ উৎপাদন ৮৫ লাখ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
সোমবার (২৪ জুলাই) রাজধানীর মৎস্য ভবনে মৎস্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৩’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, অতিরিক্ত সচিব আব্দুল কাইয়ূম, মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, গড়বো স্মার্ট বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে এ বছর ২৪ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন করা হচ্ছে। এ উপলক্ষে কেন্দ্র থেকে প্রান্তিক পর্যায়ে নানা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এবারের কর্মসূচির অন্যতম লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট মৎস্য খাত গড়ে তোলা। স্মার্ট মৎস্য খাতে উৎপাদন, বিপণন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রফতানির প্রক্রিয়ায় স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মৎস্য খাত থেকে সর্বোচ্চ অবদান রাখার লক্ষ্য নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কাজ করছে।’
আরও পড়ুন- শরীয়তপুর পৌরসভায় বাজেট পেশ
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত মাছ উৎপাদন এবং দেশে ও বিদেশে সরবরাহের জন্য সরকার দেশে আন্তর্জাতিক মানের পরীক্ষাগার তৈরি করেছে। পরীক্ষাগারে পরীক্ষার মাধ্যমে বিদেশিদের চাহিদা অনুযায়ী মাছ রফতানি করা হচ্ছে। অপরদিকে বিদেশ থেকে মাছের জন্য যেসব খাদ্য উপাদান আসে, সেগুলোও এ পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হচ্ছে। যাতে মাছ উৎপাদন, আহরণ ও বিপণনে অস্বাস্থ্যকর কোনও উপাদান প্রবেশ করতে না পারে। শুধু মাছ উৎপাদন নয় বরং স্বাস্থ্যসম্মত ও খাবার উপযোগী নিরাপদ মাছ উৎপাদন সরকারের লক্ষ্য। আগে আমাদের লক্ষ্য ছিল— মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি। এখন আমাদের লক্ষ্য দেশে স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা।’
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী জানান, ২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৫ লাখ মেট্রিক টন, যা বর্তমান উৎপাদনের চেয়ে ১ দশমিক ৮ গুণ বেশি। উৎপাদিত মাছ মানব স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ করতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। উৎপাদন, বিপণন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানির প্রক্রিয়ায় স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। আন্তর্জাতিকমানের পরীক্ষাগারের মাধ্যমে বিদেশিদের চাহিদা অনুযায়ী মাছ রপ্তানি করা হচ্ছে। বিদেশ থেকে আসা মাছের খাদ্যও পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হচ্ছে। মাছের বহুমুখী ব্যবহার নিয়ে যারা কাজ করতে চায় তাদের সহজ শর্তে, স্বল্প সুদে কৃষি ঋণ দেওয়া হচ্ছে।
মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে সোমবার সকাল ৮টায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের নেতৃত্বে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে শোভাযাত্রা হয়।