বগুড়ায় বিএনপির পদযাত্রা থেকে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়েছে দাবি করছে পুলিশ। অন্যদিকে নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ করছে বিএনপি। পুলিশের দাবি বিএনপির হামলায় তাদের ১০ জন সদস্য আহত হয়েছে। আর এদিকে বিএনপি নেতারা দাবি করছেন পুলিশের ছোরা গুলিতে অন্ততঃ ২৫ জন বিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের ইয়াকুবিয়ার মোড়ে এবং পরে জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ টিয়ার সেল ও ফাঁকাগুলি ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। বিএনপি নেতারা পুলিশ ফাঁড়িতে ভাঙচুর চালায়। এ সময় একাধিক ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটে।
এখনো থেমে থেমে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে পুলিশ।
জানা যায়, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বগুড়ার বনানী থেকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনার নেতৃত্বে পদযাত্রা শহরের দিকে আসে। ইয়াকুবিয়ার মোড়ে পৌঁছালে পদযাত্রার পেছনে থাকা নেতাকর্মীরা সরাসরি সাতমাথার দিকে যেতে চান। এতে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে বিএনপির নেতাকর্মীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে পুলিশ পরিদর্শক তারিকুল ইসলামসহ ১০ জন আহত হন। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
আরও পড়ুন- ঢাকা-১৭ আসনে বিজয়ী আরাফাত
এর কিছুপর শহরের নবাববাড়ি সড়কে দলের কিছু নেতাকর্মী বিএনপি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ শুরু করে। সেখানে পুলিশ কয়েকটি টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে।
বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা দাবি করেন, পুলিশ তাদের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে। এতে অন্তত ২৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের ইয়াকুবিয়ার মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা করার কথা। পদযাত্রা নিয়ে সরাসরি সাতমাথায় যাওয়ার কোনো অনুমতি ছিল না। তারা পদযাত্রা নিয়ে সাতমাথা যেতে চাইলে বাধা দেওয়া হয়। এ সময় তারা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। এতে ১০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরে টিয়ারশেল ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। সেখান থেকে তারা নবাববাড়ি সড়কে সদর ফাঁড়িতে হামলা চালায় এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করে।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ্ আল রাজী জুয়েল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ১৮ জুলাই বেলা ১১টায় শহরের শহীদ খোকন পার্ক থেকে শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা বের করার কথা জানানো হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকেই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহরের সাতমাথায় সমবেত হতে থাকেন। উভয় দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে ঘিরে সকাল থেকেই শহরজুড়ে চাপা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।