ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের যৌথ সম্মেলন যেন বিশৃঙ্খলার মহাযজ্ঞে পরিণত হয়েছে। কেন্দ্রীয় দুই নেতার সম্মেলনে দেরিতে উপস্থিত হওয়া, বিশেষ অতিথি, বিশেষ বক্তা কেউ বক্তব্য না দেওয়াসহ ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের চার নেতার ক্ষুব্ধ হয়ে মঞ্চ ছাড়া ছিল চোখে পড়ার মতো।
তারা হলেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক।
আজ শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের দুই ইউনিটের সম্মেলনে এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ঢাকা মহানগরের এই সম্মেলন সকাল ১০টায় উদ্বোধনের কথা থাকলেও এক ঘণ্টা দেরিতে শুরু হয়। দীর্ঘ এক ঘণ্টায় মহানগরের বিদায়ী কমিটির চার নেতা বক্তব্য দেন। এসময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন এখন বক্তব্য রাখবেন মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। কিন্তু শুক্রবার হওয়ায় জুমার নামাজের কারণে প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বক্তব্য দেন। এ সময় বক্তব্য দিতে না পেরে ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের চার নেতা মঞ্চ ত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন- লক্ষ্মীপুরে ভাইয়ের হাতে ভাই খুন : ঘাতক আটক
এছাড়া বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পাননি আমন্ত্রিত অতিথি আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহম্মদ মোহাম্মদ মান্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। সম্মেলনের প্রধান বক্তা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্যও বক্তব্য দিতে পারেননি।
এসময় ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনার খাঁটি কর্মী বিশৃঙ্খলা করে না। সব নেতা হয়ে গেছে। কতজন নেতা? আজকে নানকের মতো, আপনাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা, সাবেক মন্ত্রী, যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান সময়ের অভাবে বক্তৃতা দিতে পারল না। আপনারা মাইক ধরলে ছাড়েন না। পরে কে বলবে খেয়াল থাকে না। আজকে জুমার দিন খেয়াল থাকে না। এই ছাত্রলীগ আমরা চাই না। সুশৃঙ্খল করুন। সুসংগঠিত করুন। কথা শুনবে না, এই ছাত্রলীগ আমাদের দরকার নেই। অপকর্ম করবে এই ছাত্রলীগ চাই না। দুর্নামের ধারা থেকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে।’
কাদের বলেন, ‘এটা কি ছাত্রলীগ? কোনো শৃঙ্খলা নেই। জয়-লেখক এটা কী ছাত্রলীগ। পোস্টার নামাতে বললাম, তারা নামায় না। এরা কারা, আমি খোঁজ নিচ্ছি। এতো নেতা স্টেজে, তাহলে কর্মী কোথায়?’
সম্মেলনের প্রধান বক্তা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যও বক্তব্য দিতে পারেননি।
আরও পড়ুন- পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত বিরামপুরের কৃষকরা
ঢাকা মহানগরের এই সম্মেলন সকাল ১০ টায় উদ্বোধনের কথা থাকলে ১১ টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করা হয়। দীর্ঘ এক ঘণ্টায় মহানগরের বিদায়ী কমিটির চার নেতা বক্তৃতা করেন। দুপুর ১২ টায় মঞ্চে আসেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এসময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন এখন বক্তব্য রাখবেন মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। কিন্তু শুক্রবার জুমআর নামাজের কারণে প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বক্তৃতা শুরু করেন। এসময় ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের চার নেতা মঞ্চ ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের শাসিয়ে বলেন, শেখ হাসিনার খাঁটি কর্মী বিশৃঙ্খলা করে না। সব নেতা হয়ে গেছে। কতজন নেতা? আজকে নানকের মতো, আপনাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা, সাবেক মন্ত্রী, যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান সময়ের অভাবে বক্তৃতা দিতে পারলেন না। আপনারা মাইক ধরলে ছাড়েন না। পরে কে বলবে খেয়াল থাকে না। আজকে জুম্মা দিন খেয়াল রাখেন না। এই ছাত্রলীগ আমরা চাই না। সুশৃঙ্খল করুন। সুসংগঠিত করুন। কথা শুনবে না এই ছাত্রলীগ আমাদের দরকার নেই। অপকর্ম করবে এই ছাত্রলীগ চাই না। দুর্নামের ধারা থেকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে। এটাই আজকের অঙ্গীকার।
আরও পড়ুন- লক্ষ্মীপুরে আলাউদ্দিন হত্যা : যুবদলের ফরিদসহ ৫ নেতা কারাগারে
তিনি বলেন, বাহাউদ্দিন নাছিম আছেন, কারা নির্যাতিত নেতা। আমাদের কারেন্ট জয়েন্ট সেক্রেটারী বক্তৃতা দিতে পারেন নাই। আমন্ত্রিত অনেকেই বক্তৃতা করতে পারেন না। আজকে মহানগরের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক কেউ বক্তৃতা দিতে পারেন নাই। তারা বক্তা ছিলেন। আমাদের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বক্তব্য দিতে পারেন নাই। তাহলে দাওয়াত দিলেন কেন? একটু একটু করে বলতে পারলেন না? আপনারা দুজনেই এক ঘণ্টা, মনে নাই আজকে শুক্রবার। লেখকের না হয় মনে নাই জয়ের কী মনে নাই। এটা কোন ছাত্রলীগ? বন্ধ করেন।
ওবায়দুল কাদের হুশিয়ার করে বলেন, যার নামে স্লোগান দেবেন তাকে বানাবো না। স্লোগান যার নামে হবে সে বাদ। সে বাদ বলে দিচ্ছি।
তিনি বলেন, এটা কী ছাত্রলীগ? কোনো শৃঙ্খল নাই। লেখক -জয় এটা কী ছাত্রলীগ। নামাতে বললাম পোষ্টার, তারা নামায় না। কারা আমি খোঁজ নিচ্ছি। নামাও, পোষ্টার নামাও। তারপরও নামায় না। স্লোগান বন্ধ। এতো নেতা স্টেজে, তাহলে কর্মী কোথায়? এই ছাত্রলীগ চাই না। শেখ হাসিনার ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধুর ছাত্রলীগ এই ছাত্রলীগ না। মুজিব কোট পড়লেই মুজিব সৈনিক হওয়া যায় না। মুজিব সৈনিক হতে হলে মজিবের আদশের সৈনিক হতে হবে।