বাংলাদেশের ক্রিকেটে মাশরাফি বিন মুর্তজা অনন্য এক আসন নিয়ে আছেন। ক্রিকেটার মাশরাফিকে ছাপিয়ে গিয়েছে তাঁর মানবিক গুনাবলি। মাঠ এবং মাঠের বাইরে নড়াইল এক্সপ্রেসের এসব গুনাবলি আমাদের নজর এড়ায়নি। আর তাইতো দলমত নির্বিশেষে মাশরাফিকে নড়াইল-২ আসনের মানুষ সাংসদ নির্বাচিত করেছেন। তিনি এখন সাংসদ। একই সাথে বাংলাদেশের ওয়ানডে দলের অধিনায়কও। বঙ্গবন্ধু বিপিএলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঢাকা প্লাটুনকেও।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিরুদ্ধে অত্যন্ত বাজেভাবে হেরেছে ঢাকা। অথচ এই ম্যাচেও উদারতা দেখালেন মাশরাফি। ইমরুল কায়েসকে রান আউট করার সুযোগ পেয়েও করেননি। পরে সেই ইমরুলই ম্যাচটি বের কেরে নিয়ে গেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে ইনিংসের চতুর্থ ওভারে। মেহেদী হাসানের বলে রক্ষণাত্মক খেলে বল সামনে ঠেলে দিয়েছিলেন ইমরুল কায়েস। ফলো থ্রুর মোশনে তার শরীর চলে গিয়েছিল ক্রিজের বাইরে। পরে ক্রিজে না ঢুকেই বল ডেড হয়েছে ভেবে ব্যাট দিয়ে পিচ ঠুকতে থাকেন। এরমধ্যে ফিল্ডার মুমিনুল হক বল ধরে ভেঙে ফেলেছেন স্ট্যাম্প। আম্পায়ারও তুলে ফেলেছিলেন আঙুল। নিয়ম অনুযায়ী আউট ইমরুল। তখন ২ রানে থাকা ইমরুলকে এভাবে ফেরাতে চায়নি ঢাকা প্লাটুন।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে এমনটাই জানিয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ২ রানে জীবন পাওয়া ইমরুল পরে ৫৩ বলে করেন ৫৪ রান। ১২৫ রান তাড়ায় যা হয়ে ওঠে মহামূল্যবান। ৬ উইকেটে হেরে যায় ঢাকা। সেই রান আউট না করা প্রসঙ্গে মাশরাফি বলেছেন,‘ সত্যি কথা বলতে এটা ফিল্ডিং দল আউটটা নিতে পারে। ইমরুল শ্যুড লার্ন দ্য ম্যানারস, ও কিন্তু ধন্যবাদও বলেনি (হাসি)।’ মাশরাফির কথার মাঝেই তখন তাকে ধন্যবাদ জানান ইমরুল।
ক্রিকেটীয় নিয়ম অনুসারে ইমরুলকে ফেরাতে পারতেন মাশরাফি। কিন্তু সেটি সুন্দর দেখাত না। মাশরাফির কথায়, ‘ ক্রিকেটিং পথে এগিয়ে গেলে থার্ড আম্পায়ার আউট দিতে পারত। আমার মনে হয় তামিম খেলছে, আমি খেলছি এরকম আউট নেব এটা ভালো দেখায় না।’
এবারের বিপিএলে দারুন ছন্দে আছেন ইমরুল। আট ম্যাচে এর মাঝেই হাঁকিয়েছেন তিন ফিফটি। রান করেছেন ২৮৯। ইমরুলের এই ছন্দে থাকাটা প্রশংসাই কুড়িয়েছে মাশরাফির, ‘ প্লেয়ার ইমরুলকে নিয়ে তো সন্দেহ নাই। ধারাবাহিকতা প্রথম থেকেই আছে। যেটা খুব ভালো। একটা ব্যাটসম্যান এ লেভেলেই থাকুক রান করলে আত্মবিশ্বাস থাকে। আজকে যেভাবে খেলেছে দায়িত্ব নিয়ে খেলেছে। আশা করি পরে বাংলাদেশ দলে সুযোগ পেলে এরকমই খেলবে।’