লক্ষ্মীপুরে পারিবারিক দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে বৃদ্ধা মা শিরিন আক্তারকে (৬০) কিল-ঘুষি ও মরিচের গুঁড়ো নিক্ষেপ করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বড় মেয়ে ইউপি সদস্য মরিয়ম বেগম আখির বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা লক্ষ্মীপুর জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বৃদ্ধা শিরিন আক্তার শীর্ষ সংবাদকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর-আগে দুপুর ১২ টার দিকে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর গ্রামে ছানহা হাজ্বী বাড়ীতে নিজ মেয়ের হাতে লাঞ্ছিত হন বৃদ্ধা শিরিন।
আঁখি ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড নারী ইউপি সদস্য।
বড়-বোন আঁখির হাত থেকে মাকে বাঁচাতে গিয়ে মারধরের শিকার হন ছোট-বোন হালিমা আক্তার সাখি ও তার দুই বছরের শিশুকন্যা তানহা।
৯৯৯ কল পেয়ে সদর মডেল থানার পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে শিরিন আক্তার ও সাখিকে উদ্ধার করে হাসপাতালের পাঠান।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃদ্ধা শিরিন আক্তারের স্বামী নুর নবীর মৃত্যুর পর থেকে বৃদ্ধা শিরিন আক্তার তার বড় মেয়ে আঁখির কাছেই থাকেন। আঁখি বিয়ের পর থেকে বাবার বাড়ীতে থাকে স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে। তারা ৩ বোন। পারিবারিক কোনকিছু নিয়ে দ্বন্দ্ব বাঁধলে আঁখি তার মায়ের ওপরে রেগে উঠেন। এনিয়ে একাধিকবার আঁখি তার মাকে লাঞ্ছিত করছেন। থানা ও উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ ও দিয়েছেন (মা) শিরিন আক্তার। সর্বশেষ (আজ) মঙ্গলবার সকালে বাড়ীর ওপর থেকে দুইটি করই গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে আঁখি ও তার ছোট-বোন সাখির সঙ্গে তর্কবিতর্ক হয়। একপর্যায়ে আঁখি তার মা শিরিন আক্তার ও ছোট-বোন সাখিকে মরিচের গুঁড়ো নিক্ষেপ করে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারেন। এতে আঁখির মার ঠোঁট পেটে গিয়ে দাঁতে মারাত্মক জখম হন। বর্তমানে তিনি সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বৃদ্ধা শিরিন আক্তার জানান, আঁখির বিয়ের পর থেকে সেই আমাদের বাড়ীতে থাকেন। কারণে-অকারণে এ পর্যন্ত ৩ থেকে ৪ বার আঁখির হাতে আমি মারধরের শিকার হয়েছি।কান্না কন্ঠে তিনি আরও বলেন, আমি চাই না আমার মতো আর কোনো মা যেনো সন্তানের হাতে লাঞ্ছিত না হয়।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত মরিয়ম বেগম আঁখি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে বলেন, আমি আমার দুই বোনের চেয়ে মাকে অনেক ভালোবাসি। আমাদের বোনদের পক্ষ গিয়ে মা এখন আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। রাগে মরিচের গুঁড়ো নিক্ষেপ করছি, তবে মার গায়ে আমার বিন্দুমাত্র হাতের ছোঁয়া লাগেনি।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় (এসআই) মোজাম্মেল হোসেন শীর্ষ সংবাদকে জানান, ৯৯৯ কল পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। বৃদ্ধা অভিযোগ দিলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।