স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, টার্মিনাল ছাড়া টোল আদায় করা যাবে না। বাস টার্মিনাল ও নির্ধারিত স্থান ছাড়া টোল আদায় করলে চাঁদাবাজির মামলা হবে। স্থানীয় সরকার বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন দেবে। সেখানে কোন কোন স্থান থেকে কী পরিমাণ টোল আদায় করা যাবে তা উল্লেখ থাকবে। এর বাইরে টোল বা চাঁদা আদায় করা হলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির ১১১ দফা সুপারিশমালা বাস্তবায়নের জন্য টাস্কফোর্সের সভা শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘টার্মিনাল ছাড়া অন্য কোথাও কোনো প্রকার টোল আদায় করা যাবে না। টোল মানে বাস কিংবা ট্রাক মালিক ও শ্রমিক সমিতি একটা টোল নিয়ে থাকে তারাই সেটা নির্ধারণ করেন, সেটা টার্মিনাল ছাড়া কোনো জায়গা থেকে নেওয়া যাবে না। এ বিষয়ে সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন- শর্ত পূরণ করলে অন্য নামে জামায়াত নিবন্ধন পাবে
মন্ত্রী বলেন, ‘পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন এলাকার বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি হবে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রজ্ঞাপনে তারা জানিয়ে দেবেন কোন জায়গায় কত টাকা টোল দিতে হবে।’
এটা যারা না মানবে, তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা হবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘অবৈধ ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ স্কুলগুলো বিআরটিএর নীতিমালার আওতায় নিয়ে আসার জন্য কাজ করা হবে। এ বিষয়ে একটি প্রোগ্রাম ঘোষণা করে বিআরটিএ তদারকি শুরু করবে। চালক শ্রমিকদের ডোপ টেস্ট প্রবর্তন করেছি। এ টেস্টটি সহজে ও স্বল্পতম সময়ে করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা এখানে আলোচিত হয়েছে।’ মোটরসাইকেল চালকদের হেলমেটের মান নির্ধারণের জন্য বিআরটিএকে বলা হয়েছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘তবে এটা যথাযথ কর্তৃপক্ষ বিএসটিআই, বিআরটিএ বিএসটিআইর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। খুব সহসা একটা স্পেসিফিকেশন নির্ধারণ করে দেবে তারা। সেটা মেনে চলতে হবে।’
বিআরটিএর জনবলের ঘাটতি রয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিআরটিএর জনবল বাড়ানোর বিষয়ে আমরা সুপারিশ করবো। সচিব সাহেব এখানে ছিলেন, তিনি এ বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ ও উত্তর ঢাকা সিটি করপোরেশন আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণকাজ শুরু হতে যাচ্ছে। এটাও আজকে আলোচনা হয়েছে। আমাদের বাস ও ট্রাক টার্মিনাল খুবই স্বল্প, তা আরও বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে।’
আরও পড়ুন- নিজেদের লজ্জার হারের রেকর্ড ভাঙল বাংলাদেশ
মন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে অনেক রাস্তা দখল করে রেখেছে। এসব বড় বড় প্রকল্পের জন্যও যানজট লাগে। এছাড়া, রাজধানীতে যে পরিমাণ সড়ক দরকার তার চেয়ে কম আছে। রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণেও যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ট্রাফিক পুলিশের গাফিলতির কারণে রাজধানীর যানজট কমছে না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, ‘ট্রাফিকের ওপর চড়াও হলেন, যারা যানজট সৃষ্টি করে সেখানে তো কিছু বলেন না। কিছুক্ষণ আগে বিএনপির যুবদল যে যানজটটা সৃষ্টি করেছে এ এলাকায়, আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমারই আসতে ১৫ মিনিট দেরি হয়েছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি দেখছেন মেট্রোরেল, দেখছেন এলিভেটড এক্সপ্রেস- এগুলো আসছে খুব সহসাই। আপনি কী বলবেন আমিও তো ভুক্তভোগী। মেট্রোরেলের জন্য অনেক বড় বড় রাস্তা দখল হয়ে আছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ক্ষেত্রেও সেভাবে আছে। আমাদের ঢাকা শহরে আরও বেশি রাস্তা প্রয়োজন যেগুলো আমরা তৈরি করতে পারিনি। আধুনিক শহরের জন্য ২৫ শতাংশ রাস্তা দরকার, আমাদের আছে সাড়ে ৮ শতাংশ। এ জায়গাতে আমাদের দুর্বলতা রয়েছে।’