ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, তিস্তা, ধরলাসহ ১৬টি নদ-নদীবেষ্টিত জেলা কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলগুলোতে যুগযুগ ধরে চলছে মহিষ পালন। এর মধ্যে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার চরাঞ্চলগুলোতেই মহিষ পালন বেশি দেখা যায়। চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ চারণভূমিতে জন্মানো সবুজ লতাপাতা আর সবুজ ঘাস সহজেই খাদ্য হিসেবে পাওয়ায় অল্প পুঁজিতে মহিষ পালন করে নিজেদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাচ্ছে এখানকার চাষি ও খামারিরা।
ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার উলিপুর, রৌমারী, রাজিবপুর, চিলমারী উপজেলার চরাঞ্চলগুলোতে খোলা আকাশের নিচে চড়াতে দেখা যায় মহিষের পাল। চারণভূমিতে জন্মানো সবুজ ঘাস খেয়ে চড়ে বেড়ানো এবং নদের পানিতে নেমে সাঁতার কাটা মহিষগুলোর স্বাস্থ্যও চমৎকার। চরে জন্মানো ঘাস-পাতা এদের মূল খাদ্য হওয়ায় খরচও কম হয় চাষিদের। মহিষ পালনে তেমন যত্ন না নিলেও প্রাকৃতিকভাবেই এরা বেড়ে ওঠে। চরের মহিষের দুধের চাহিদা অনেকটা বেশি থাকায় লাভবান হচ্ছে পালনকারীরা। অনেকে বাড়িতে নিজেরাই দুধ থেকে দই, মিষ্টি, ঘিসহ মুখরোচক খাবার তৈরি করে হাটে নিয়ে বিক্রি করে পরিবারের চাহিদা মেটাচ্ছেন।
আরও পড়ুন- সরকারিভাবে ফিজিতে যাওয়ার সুযোগ
চরাঞ্চলে মহিষ পালন উলিপুর উপজেলার আইরমারীর চরের বাসিন্দা বলেন, চরের প্রায় প্রত্যেক কৃষকের তিন থেকে চারটা মহিষ রয়েছে। মহিষ পালনে তেমন যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন না থাকায় প্রাকৃতিকভাবেই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে এরা বেড়ে ওঠে। তার ওপর চরেই প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো ঘাস-পাতা এদের খাদ্য চাহিদা পূরণ করে। চরাঞ্চলে মহিষ পালন
চিলমারী উপজেলার কাচিচরের কৃষক গোলাপ সরকার বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই চরাঞ্চলে মহিষ পালন হয়। আগে বাপ-দাদাদের আমলে অনেক বেশি পরিমাণে মহিষ পালন হতো। চরের প্রায় প্রত্যেক কৃষকের দুই থেকে চারটি করে মহিষ রয়েছে। তার নিজেরই তিনটি মহিষ আছে। মহিষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হওয়ায় রোগ-বালাই কম হয়। তেমন একটা খরচ না করেই দুধও পাওয়া যায় বেশি। এছাড়া মহিষের মাংস সুস্বাদু হওয়ায় এর চাহিদাও প্রচুর।