লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার ৮নং দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিন্টু ফরাজীকে লাঞ্চিত করেছে ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোহাম্মদ আলমগীর ওরফে মোহাম্মদ আলী, তার ভাই লিটন ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার বিকেল সাড়ে ৬টা দিকে আখন বাজারস্থ মিন্টু ফরাজীর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে।
জানাযায়, সৌদিতে স্থানীয় আখন বাড়ীর দুই প্রবাসীর ৬ হাজার রিয়্যাল অর্থের লেনদেনের বিষয়ে বিরোধ দেখা দিলে রবিবার বিকেলে চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত কার্যলয়ে এক শালিসি বৈঠকের আয়োজন করেন চেয়ারম্যান স্বয়ং। ওই শালিসে চেয়ারম্যান মিন্টু ফরাজী, ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোহাম্মদ আলী, ৪নং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেম্বার আব্বাস উদ্দিন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমান আওয়ামীলীগ নেতা তারেক আজিজ জনি সহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। এসময় প্রায় ৭০/৮০ জন মানুষের উপস্থিতি ছিল ওই শালিসি বৈঠকে।
বৈঠকে মেম্বার মোহাম্মদ আলী ও তার ভাই লিটন একটি পক্ষ এবং তাদেরই বাড়ির (আখন বাড়ি) জনৈক প্রবাসী ডালিম গং অন্য পক্ষের। শালিসদারগণ বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় শুরু হলে মেম্বারের সন্ত্রাসী ভাই লিটন প্রবাসী ডালিমকে অতর্কিতে কিল-ঘুষি মারা শুরু করলে তার সাথে থাকা ১৪/১৫ জন সন্ত্রাসীও একত্রিত হয়ে ডালিম ও তার দুই ভাইকে এলোপাতাড়িভাবে কিল-ঘুষি মারা শুরু করে।
এসময় চেয়ারম্যান মিন্টু ফরাজী ও তারেক আজিজ জনি হামলাকারীদের নিভৃত করতে গেলে তাদেরকেও কিল-ঘুষি মেরে আহত করে হামলাকারীরা। এসময় চেয়ারম্যান তার ডান হাতে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হোন।
স্থানীয়রা জানায়, মেম্বারের ভাই লিটন ২০১৮ সালের পুলিশের উপর হামলা মামলার এজাহার ও চার্জসীটভূক্ত আসামী। ওই এলাকায় মেম্বার মোহাম্মদ আলী ও তার ভাই লিটন এবং তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে।
ঘটনার পর সন্ধ্যায় আহত প্রবাসী ডালিম ও তার দুই ভাইকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের ৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ৪নং ইউপি আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্বাস উদ্দিন বলেন, বিষয়টি ন্যাক্কারজনক ও মামলাযোগ্য অপরাধ। মোহাম্মদ আলী মেম্বারগং সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। এরা আইন ও শালিস অমান্যকারী। এদের উপযুক্ত বিচার হওয়া উচিৎ।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তারেক আজিজ জনি বলেন, শালিসে পরাজিত হবার আশঙ্কায় মেম্বার, তার ভাই ও তাদের সাথের লোকজন এই বর্বরোচিত হামলার ঘটনাটি ঘটিয়েছে। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, আমি ঘটনাটি রায়পুর থানার ওসি সাহেবকে জানিয়েছি।
চেয়ারম্যান মিন্টু ফরাজী বলেন, এটা একটা দুঃখজনক ঘটনা। হামলাকারীরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন। এটা একটা সন্ত্রাসী হামলা। আমি এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
রায়পুর সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রবাসী ডালিম বলেন, মেম্বার ও তার ভাই লিটন আমার আত্মীয় এবং আমরা একই বাড়িতে বসবাস করি। এরা বহু পূর্ব থেকেই আমাদের সাথে নানা বিষয়ে মিথ্যা ঝগড়া ও বিরোধ করে আসছে। এরা সন্ত্রাসী প্রকৃতির ও আইন অমান্যকারী লোক। স্থানীয় লোকজন তাদের ভয়ে কিছু বলার সাহস পায়না। লিটন ২০১৮ সালে পুলিশের উপর হামলা করেছিল, ওই মামলা এখন আদালতে চলমান। আমি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এনিয়ে ওই এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।