biggapon ad advertis বিজ্ঞাপন এ্যাড অ্যাডভার্টাইজ XDurbar দূর্বার 1st gif ad biggapon animation বিজ্ঞাপন এ্যানিমেশন biggapon ad advertis বিজ্ঞাপন এ্যাড অ্যাডভার্টাইজ
ঢাকাFriday , 9 September 2022
  1. অন্যান্য
  2. অর্থ ও বাণিজ্য
  3. আইন-বিচার
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আবহাওয়া
  6. কৃষি ও প্রকৃতি
  7. খেলাধুলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চাকরি
  10. জাতীয়
  11. ধর্ম
  12. নির্বাচন
  13. প্রবাসের খবর
  14. ফিচার
  15. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
Xrovertourism rovaar ad বিজ্ঞাপন
আজকের সর্বশেষ সবখবর
  • শেয়ার করুন-

  • Xrovertourism rovaar ad বিজ্ঞাপন
  • মুক্তারের ‘মাল্টা’ বাগানের সাফল্য দেখে আগ্রহী হচ্ছে বেকার যুবকরা

    Link Copied!

    ‘সারি-সারি মাটির উচু লেন, তার উপরেই সারিবদ্ধ দাঁড়িয়ে মাল্টা গাছ। ভরপুর মাল্টায় নুয়ে পড়ছে ডালপালা। সবুজ আরণ্যে পাতার ফাঁকে ফাঁকে উকি দিচ্ছে লেবু জাতীয় এ রসাত্বক ফল ‘মাল্টা’। যেদিকে তাকাই, এ যেনো এক মাল্টা গ্রাম। লক্ষ্মীপুরের রায়পুর চরলক্ষ্মী ইউনিয়নের হাজিমারা গ্রামে সাড়ে ৮ একর জমির উপরে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠেছে মাল্টা বাগান। বর্তমানে এ বাগানে ১৫০০টি মাল্টা ফলের গাছ রয়েছে। উৎপাদিত মাল্টা বাজারজাত করে প্রতিবছর সাফল্য দেখছেন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা রেজাউল করিম মুক্তার। তিনি লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১৫নং ওয়ার্ডস্থ বেড়ীর মাথা নামক এলাকার বাসিন্দা।

    ‘ইউটিউব’ দেখে, নিজের মেধা খাঁটিয়ে গড়ে তুলেন এ বিশাল মাল্টা বাগান। এজন্য তিনি ৮০ লক্ষ টাকা পারিবারিক ভাবে মূলধনও পান। তার এ বাগানকে ঘিরে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে ১০/১২ জন বেকার মানুষের। মুক্তারের সাফল্য দেখে দিন দিন মাল্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে বেকার যুবকরাও। এদিকে লক্ষ্মীপুরের মত প্রত্যেন্ত অঞ্চলে প্রশিক্ষণহীন এক যুবকের কৃষিতে এমন সাহসিক সাফল্য দেখে অভিভূত খোদ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। মাল্টার ফলন বৃদ্ধিতে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ।
    জানা যায়, ২০১৬ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা উর্ত্তীণের পর কিছু দিন বেকার ঘুরাঘুরি করেন রেজাউল করিম মুক্তার। প্রবাসী আপন বড় ভাই আজিম ভূঁইয়ার উৎসাহ উদ্দীপনায় ঝুঁকে পড়েন মাল্টা চাষে। বিগত ৫ বছর পূর্বে আত্মীয়দের কাছ থেকে সাড়ে ৮ একর জমি ১০ বছরের চুক্তিতে ১২ লক্ষ টাকা বিনিময়ে ভাড়া নেন তিনি। এরপর ইউটিউব দেখে-দেখে মাল্টা চাষের উপযোগী করে তুলতে তৈরি করেন সমতল থেকে উচু উচু মাটির লেন। যা বর্ষায় মৌসুমেও পানিমুক্ত রাখবে মাল্টা গাছকে। প্রথমবার ৩ হাজার কলফ চারা লাগান ওই বাগানে। কিন্তু কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই হঠাৎ সবগুলো মাল্টা গাছ মারা যায়। এতে সার ও কিটনাশকসহ প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতির শিকার হন তিনি। তবে এ লোকশানে তিনি একটুও ভেঙে পড়েন নি। পারিবারিক উৎসাহ ও নিজের আত্মবিশ্বাস থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর সংগ্রামে নেমে পড়েন। সাফল্যের কথা মাথায় রেখে পুনরায় রাজশাহী থেকে এক বছর বয়সী মাল্টার কলফ চারা এনে রোপন করেন তিনি। সার ও কিটনাশক প্রয়োগসহ নিয়মিত স্বেচ্ছ ও আগাছা পরিচর্যায় বাগানেই ব্যস্ত থাকেন তিনি এবং মজুরি ভিত্তিক নিয়োগকৃত শ্রমিকরা।
    আলাপ কালে শ্রমিকরা জানা যায়, মুক্তারের মাল্টা বাগানের কারণে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। বর্তমানে বাগানে ‘বারি মাল্টা-১’ জাতের প্রায় ১৫০০ মাল্টার গাছ রয়েছে। মাল্টার পাশাপাশি ওই জমিতে ১০০০ বিভিন্ন জাতের আম, বেশ কয়েকটি কমলা, লেবু ও পেপে গাছ রয়েছে। এছাড়াও মুক্তারের আরো দুই একর জমিতে ৪ হাজার পেয়ারা গাছের বাগান রয়েছে।
    বাগান মালিক রেজাউল করিম মুক্তার জানান, মাল্টা বাগানই আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। প্রথম দু’বছর ফলন আসলেও লাভের আশা না করে তা ছেটে ফেলে দিয়ে মাল্টার চারাগুলোকে বড় হওয়ার সুযোগ দেয়া হয়। তৃতীয় বছর থেকে ফলগুলোকে বড় হওয়ার সুযোগ দেন। এতে তৃতীয় বছরে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার মাল্টা বিক্রি হয় তাঁর। চতুর্থ বছরে অর্থাৎ গত বছর প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার মাল্টা বাজারের আড়ৎ দারদের কাছে বিক্রি করেছেন তিনি। চলতি বছর ফলন ভালো হওয়ায় এবং বাজার দর ভালো পেলে মাল্টা বিক্রিতে ৩০ লক্ষ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।
    তিনি আরো জানান, ১ বছর বয়সী চারা লাগানোর ২ বছর পর থেকেই ফলন আসতে শুরু করে। ফুল, পরাগায়ন এবং খাবার উপযোগী মাল্টা ফল হতেই ৭/৮ মাস সময় লেগে যায়। এক-একটি মাল্টা গাছের যত্মের পেছনে প্রায় ৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে তার। সে হারে প্রতি গাছে ৩০০/৪০০টিরও বেশি মাল্টা ফল ধরে। সঠিক যত্ম নিলে এক একটি মাল্টা গাছ ১০ বছর পর্যন্ত ফলন দিয়ে থাকে। তাই মাল্টা চাষে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
    এদিকে নিজ এলাকায় এখন মুক্তার একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তার নাম। প্রতিদিন আশপাশসহ দূর দূরান্তের বহু মানুষ ঘুরতে আসেন মুক্তারের মাল্টা বাগান দেখতে। সুন্দর মনোরম পরিবেশে সাজানো গুছানো মাল্টা বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলে থাকা মাল্টাগুলো দেখে অভিভুত হচ্ছেন দর্শনার্থীরা। অনেকে বাগান থেকেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন মাল্টা। এর মধ্যে অনেক বেকার যুবক উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেরাও ছোট ছোট মাল্টা বাগান করার চেষ্টা করছেন। মুক্তার তাদের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছেন। এ বছর প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ইতোমধ্যে মুক্তারের মাল্টাবাগানে দেখা দিয়েছে সেচ সংকট। তাই সেচ সুবিধার জন্য সরকারের কাছে একটি কৃষি সেচ যন্ত্রের সহায়তার প্রত্যাশা করছেন এই নবীন কৃষি উদ্যোক্তা মুক্তার।
    লক্ষ্মীপুর শহরের দালাল বাজার এলাকার মো. বাবুল বলেন, বিশাল বাগানে মাল্টা চাষ হয় এমন কথা শুরু একদিন বিকেলে সহপাটিদের নিয়ে দেখতে আসি। দেখি তরুন যুবক এতো বড় বাগান করে লাভ করছে। সেই দিনই তার থেকে পরামর্শ নেই। পরে তার দেয়া মাল্টার চারা নিজের পতিত জমিতে মাল্টা রোপন করি। আশা করি কিছু দিনের মধ্যে ফলন আশা শুরু করবে। একই ভাবে বলেন রায়পুর পৌর এলাকার রিয়াজ উদ্দিন ও লক্ষ্মীপুরে নুরুল ইসলাম। তারা সবাই এখন মাল্টা চাষি কৃষি উদ্যোক্তা।
    এদিকে সম্প্রতি রায়পুরের হাজিমারা গ্রামে তরুন কৃষি উদ্যোক্তা রেজাউল করিম মুক্তারের মাল্টা বাগান পরির্দশে যান লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক ড. মোঃ জাকির হোসেন। তিনি বিশাল মাল্টা বাগান দেখে অভিভূত হয়ে বলেন, এমন মাল্টা বাগান, যেমন গাছের গোদ ভালো, তেমনি অধিক ফলন, বিষয়টি মুগ্ধকর। মাল্টা বাগানের ফলন আরো বৃদ্ধির জন্য কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরণের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। মুক্তারকে দেখে মাল্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকে। এ অঞ্চলে ভালো সম্ভবনা থাকায় মাল্টা চাষে দিন দিন আবাদ বাড়ছে। জেলায় এ বছর প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হয়েছে বলে জানান তিনি।

    Share this...

    বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
    ঢাকা অফিসঃ ১৬৭/১২ টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল ঢাকা- ১০০০ আঞ্চলিক অফিস : উত্তর তেমুহনী সদর, লক্ষ্মীপুর ৩৭০০