জুমার দিনের গুরুত্ব অপরিসীম। এ দিনকে সাপ্তাহিক ঈদের দিন বলা হয়েছে। ‘জুমা’ শব্দটি ‘জমা’ শব্দ থেকে এসেছে। জমা আরবি শব্দ। এর অর্থ একত্র হওয়া বা একত্র করা।
পবিত্র কোরআনে সুরা জুমা নামে একটি স্বতন্ত্র সুরা রয়েছে। তাফসিরবিদরা বলেন, সুরা জুমার আগের সুরার নাম হলো সুরা ‘সফ’। সফ অর্থ কাতার বা সারি। জুমার নামাজ সারিবদ্ধভাবে আদায় করা হয়। এতে ঐক্য ও শৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, এতে এই ইঙ্গিত রয়েছে।
কোরআনে জুমার আলোচনা
প্রত্যেক সাবালক জ্ঞানসম্পন্ন মুসলমান পুরুষের জন্য মসজিদে গিয়ে জুমু’আর নামাজ পড়া ফরজ। এ নামাজ জামাআতে আদায় করতে হয়। এ কারণেই মহান আল্লাহ জুমু’আর দিন দ্রুত মসজিদে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا إِذَا نُوْدِيَ لِلصَّلاَةِ مِنْ يَّوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ، ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ
অর্থঃ হে ঈমানদারগণ! যখন জুমু’আর দিন নামাজের জন্য আহ্বান করা হবে, তখন তোমরা দ্রুত আল্লাহর স্মরণের জন্য উপস্থিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ কর। এটিই তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা বুঝতে পার।’ (সূরাঃ আল-জুমু’আ, আয়াতঃ ০৯)
জুমু’আর নামাজের রাকাত ছুটে গেলে করণীয়
জুমু’আর নামাজ এক রাকাত ছুটে গেলে বাকি আর এক রাকাত ইমামের সালাম ফেরানোর পর উঠে পড়ে নিলে তার জুমু’আর নামাজ আদায় হয়ে যাবে। অনুরূপ কেউ দ্বিতীয় রাকাতের রুকুর আগে থেকে পেলেও ওই রাকাত এবং তার সঙ্গে আর এক রাকাত পড়লে তারও জুমু’আর নামাজ আদায় হয়ে যাবে।
যদি কেউ দ্বিতীয় রাকাতের রুকু শেষ হওয়ার পর জামাতে শরিক হয়, তাহলে সে জুমু’আর নামাজ পাবে না। এই অবস্থায় তাকে জোহরের ৪ রাকাত আদায়ের নিয়তে জামাতে শামিল হয়ে ইমামের সালাম ফেরানোর পর ৪ রাকাত ফরজ পড়তে হবে। (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ, সৌদি উলামা-কমিটিঃ ১/৪১৮, ৪২১)
আর কেউ যদি জুমু’আর নামাজ না পায় বা মসজিদে গিয়ে দেখে জুমু’আ শেষ হয়ে গেছে তবে তাকে জোহরের নামাজ পড়তে হবে। কারণ জামাত ছাড়া জুমু’আর নামাজ হয় না।
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি (ইমামের সাথে) জুমু’আর (সালাতের) এক রাক্’আত পেয়েছে, সে যেন এর সাথে দ্বিতীয় রাক্’আত যোগ করে। আর যার দু’ রাক্’আতই ছুটে গেছে, সে যেন চার রাক্’আত আদায় করে; অথবা বলেছেন, সে যেন যুহরের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে নেয়। [সহীহঃ ইবনু মাজাহ্ ১১২১, ইবনু আবী শায়বাহ্ ৫৩৩৫, ইবনু খুযায়মাহ্ ১৮৫১, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১০৭৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৫৭৪০]



