লক্ষ্য ২৪৫ রান। শুরুটা মোটেও খারাপ ছিল না বাংলাদেশের। ওয়ানডে অভিষেকে পারভেজ হোসেন ইমন ঝড়ো সূচনা এনে দেন। মাত্র ১৬ বলেই তিনটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১৩ রান করেন তিনি। তবে হঠাৎ করেই মাথা গরম এক শটে তার ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে। তখন দলীয় রান ২৯।
এরপর তানজিদ তামিম ও নাজমুল হোসেন শান্ত মিলে স্থিরতা আনার চেষ্টা করেন। তাদের ৭১ রানের জুটি কিছুটা আশা জাগিয়েছিল। কিন্তু শান্তর রানআউটে ভাঙে এই পার্টনারশিপ। ডিপ মিডউইকেটে ঠেলে দুই রান নেওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝিতে কাটা পড়েন শান্ত। ২৬ বলে ২৩ রান করেন তিনি।
সেই মুহূর্ত থেকেই যেন ধস নামতে শুরু করে। মাত্র পাঁচ রানের ব্যবধানে সাত উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। লিটন দাস কোনও রান না করেই হাসারাঙ্গার বলে এলবিডব্লিউ হন। এরপর তানজিদ তামিমও ফিরে যান, যদিও তিনি ৬১ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৬২ রানের ইনিংস খেলেন।
তাওহিদ হৃদয় কামিন্দু মেন্ডিসের বলে বোল্ড হন, আর মেহেদী হাসান মিরাজও হাসারাঙ্গার ঘূর্ণিতে শূন্য রানে এলবিডব্লিউ হয়ে যান। ফলাফল— একসময় ১ উইকেটে ১০০ রান থেকে স্কোর দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ১০৫!
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে শ্রীলঙ্কা। প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শুরুতেই বাংলাদেশের দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও তানজিম হাসান সাকিব দারুণ ছন্দে বোলিং করেন। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে পাথুম নিশাঙ্কাকে ০ রানে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের ক্যাচ বানিয়ে ফিরিয়ে দেন সাকিব।
পরের ওভারে তাসকিন বোল্ড করেন আরেক ওপেনার নিশান মাদুশকাকে (৬)। এরপর আবার নিজের ওভারে কামিন্দু মেন্ডিসকেও সাজঘরে ফেরান তাসকিন। মিডঅফে মিরাজের হাতে সহজ ক্যাচ বানিয়ে ফেরেন কামিন্দু। তখন দলীয় রান মাত্র ২৯।
এরপর ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব নেন চারিথ আসালাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস। দুজনে ৭৭ বলে ৬০ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন। কিন্তু তানভীর ইসলামের অভিষেকের দ্বিতীয় ওভারে এলবিডব্লিউ হয়ে যান কুশল। তার আগে ৪৩ বলে করেন ৪৫ রান।
৩২তম ওভারে মিরাজ বল তুলে দেন শান্তর হাতে। প্রথম বলেই বাউন্ডারি হজম করলেও শান্ত পরের ওভারে জানিথ লিয়ানাগেকে ফেরান। লিয়ানাগে ৪০ বলে করেন ২৯ রান।
পরবর্তী সময়ে তানজিম হাসান সাকিব ফিরিয়ে দেন মিলান রথনায়েকে (২২)। আর তাসকিন তুলে নেন হাসারাঙ্গা (২২) ও থিকশানা (১)-কে।
তবে এদিনের সবচেয়ে উজ্জ্বল নাম চারিথ আসালাঙ্কা। ঠাণ্ডা মাথায় খেলে ১১৭ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। ১২৩ বলে ১০৬ রানের ইনিংসে ছক্কা মারেন ২টি ও চার ৬টি। ইনিংসের শেষ ওভারে তাকে আউট করেন তানজিম সাকিব।
শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা অলআউট হয় ৪৯.২ ওভারে ২৪৪ রানে। বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন আহমেদ ৪৭ রানে ৪ উইকেট এবং তানজিম হাসান সাকিব ৪৫ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন।