তারল্য ঘাটটি মেটাতে দুর্বল ৩ ব্যাংকে ২৬৫ কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছে সবল ৪ ব্যাংক। তারল্য সাপোর্ট দেওয়া ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- ডাচ বাংলা ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক ও ইস্টার্ণ ব্যাংক। তবে কোন তিনটি ব্যাংক এ সহায়তা পেয়েছে তা বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়নি।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, সহায়তার পাশাপাশি ঋণ আদায়ে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব কৌশল থাকা উচিত। কারণ গ্যারান্টি সহায়তা দিয়ে যে কোনো ব্যাংক ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। ঋণ আদায়ে তাদের নিজস্ব কৌশল থাকতে হবে। যদিও কিছু ব্যাংক ঋণ আদায়ে খুব ভালো করছে। তাদের মতো অন্যদেরও উদ্যোগী হতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহয়তার আশাই সব ঠিক হবে না।
এর আগে গত সপ্তাহে তারল্য ঘাটটি মেটাতে দুর্বল ৭ ব্যাংককে ১ হাজার কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছে সবল ১০ ব্যাংক। তার আগে দেওয়া হয়েছিল ৫৫৮৫ কোটি টাকা। ওই সময় এসব ব্যাংক থেকে চাওয়া হয়েছিল ১১ হাজার ১০০ কোটি টাকা। এসব ব্যাংকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সহায়তা পেয়েছে ইসলামী ব্যাংক। সাতটি থেকে ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক পেয়েছিল ২ হাজার ৯৫ কোটি টাকা।
সহায়তা পাওয়া ব্যাংকগুলোর মধ্যে ছিল- সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ছয় ব্যাংক থেকে পেয়েছে ১ হাজার ১৭৫ কোটি টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ছয় ব্যাংক থেকে ১ হাজার কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংক ৯২০ কোটি, এক্সিম ব্যাংক ৭০০ কোটি, ইউনিয়ন ব্যাংক ৪০০ কোটি এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পেয়েছে ২৯৫ কোটি টাকা।
আর যেসব ব্যাংক তারল্য সহায়তা দিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্র মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক, বেসরকারি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, পুবালী ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক ও বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক।
গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ১৭টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে সভা করেন। সভায় দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সহায়তা অব্যাহত রাখতে শক্তিশালী ব্যাংকগুলোকে অনুরোধ করেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ইসলামী ধারার শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোকে নগদ অর্থ দেওয়া বন্ধ করে দেয়। এতে ব্যাংকগুলোতে শুরু হয় তারল্য সংকট। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে চলে যায় যে, গ্রাহকরা ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত তুলতে পারছিলেন না।
এমন পরিস্থিতিতে গভর্নর সবল ব্যাংক থেকে দুর্বল ব্যাংকের নগদ টাকা ঋণ নেওয়ার বিষয়টি অনুমোদন করলে সবল ১০ ব্যাংক তারল্য সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দেয়।