দেশের ব্যাংক খাতে অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। কিছু ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার পথে। দুর্বল কিছু ব্যাংককে এরই মধ্যে একীভূত করা হয়েছে। আবার এসব ব্যাংকের তারল্য সংকট কাটাকে অর্থ সরবরাহ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে উচ্চ মূল্যস্ফীতিসহ দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণের বিষয়টি নাড়া দিয়েছে গ্রাহকদেরও। যার সঙ্গে যোগ হয় জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে গ্রাহকদের মধ্যে ব্যাংকগুলোর প্রতি আস্থার সংকট তৈরি হয়। ব্যাংকে রাখা টাকা উত্তোলনের হিড়িক পড়ে। অনেক গ্রাহক প্রয়োজনের চেয়েও অতিরিক্ত টাকা তুলে হাতে রাখতে শুরু করেন। এতে ব্যাংকের টাকা দ্রুত গ্রাহকদের হাতে চলে যেতে থাকে।
জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আবারও ব্যাংকগুলোতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরছে। গ্রাহকদের মধ্যে যারা অতিরিক্ত টাকা তুলেছিলেন, তারা এখন সেই টাকা আবার ব্যাংকে রাখতে শুরু করেছেন। ফলে ব্যাংকের টাকা আবার ব্যাংকে ফিরতে শুরু করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ব্যাংকের বাইরে ছাপানো টাকার পরিমাণ ছিল তিন লাখ এক হাজার ৯৪৭ কোটি টাকা। অক্টোবর শেষে সেই টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৭৯ হাজার ৩৪৪ কোটিতে। ফলে ব্যাংকের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ছে। ব্যাংকে ফিরতে শুরু করেছে হাতের টাকা।
জানা যায়, মানুষের হাতে টাকা ধীরে ধীরে ব্যাংকে ফিরলেও এখনো কিছু ব্যাংকের তারল্য সংকট কাটেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, আমানত ফেরাতে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে আরও উদ্যোগী হতে হবে।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, কিছু গ্রাহকের আমানতের টাকা উত্তোলনের প্রয়োজন নেই, তারপরও তারা টাকা তুলছেন।
এতে ব্যাংকগুলো সাময়িত সমস্যায় পড়ছে। একসঙ্গে এত গ্রাহক টাকা তুলতে গেলে পৃথিবীর কোনো ব্যাংকই তা দিতে পারবে না। গ্রাহকের আমানতের টাকা নিয়ে আতঙ্কের কিছুই নেই। সবাই আমানতের টাকা ফেরত পাবেন।