ঢাকাMonday , 26 August 2024
আজকের সর্বশেষ সবখবর
  • শেয়ার করুন-

  • বড় বিপদে লক্ষ্মীপুর! ভয়াবহ বন্যায় ডুবছে জেলার মানুষ

    Link Copied!

    ভয়াবহ বন্যা মোকাবেলা করছে লক্ষ্মীপুরের লাখ-লাখ মানুষ।অনেকের ঘর-বাড়ি ডুবে গেছে, ডুবে গেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ওমসজিদ। প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। পানি বেড়েছেদুই থেকে তিন ফুট।

    বানভাসি মানুষ জানিয়েছেন, এমন দুর্বিষহ অবস্থা ১৯৮৮ সালেরবন্যার সময়ও হয়নি। এবারের বন্যা আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে।অব্যাহত ভারী বৃষ্টি ও জোয়ারের ঢলে লক্ষ্মীপুর জেলার ৮০ শতাংশএলাকা এখন পানির নিচে।

    জানা যায়, নোয়াখালী থেকে বন্যার পানি ঢুকে লক্ষ্মীপুরের বিস্তীর্ণজনপদ ডুবে গেছে। এর সঙ্গে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে পুরো জেলায়।এতে সময় যত যাচ্ছে বন্যা পরিস্থিতির ততই অবনতি হচ্ছে।ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। আবার অনেকেরগন্তব্য উজানে স্বজনদের বাড়ি।

    এরমধ্যে অনেকেই আছেন যাদের গন্তব্য অজানা। অনেকে আবারচকির ওপর রান্নাবান্না করে ঘরেই অবস্থান নিয়েছেন। কোমড়পানিতে যাতায়াতে অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে। এছাড়া সুপেয় পানিরঅভাব দেখা দিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। গবাদিপশু নিয়েও বিপাকেরয়েছে গৃহস্থরা।

    সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার (২৩ আগস্ট) থেকেনোয়াখালীর বন্যার পানি লক্ষ্মীপুরে ঢুকতে শুরু করে। শনিবার (২৪আগস্ট) বিকেল থেকে পানির চাপ বেড়ে যায়। এর মধ্যে শনিবাররাত থেকে লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টি শুরু হয়।

    লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ, চরশাহী, দিঘলী, উত্তর জয়পুর, বাঙ্গাখাঁ, মান্দারী, তেওয়ারীগঞ্জ, শাকচর ও চররুহিতা ইউনিয়নপ্লাবিত হয়। এসব ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ৪-৫ ফুট পানিতেকয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পরেছে।

    একই সঙ্গে লক্ষ্মীপুর জেলা শহর দিয়ে বয়ে যাওয়া রহমতখালীখালসহ ওয়াপদা খালগুলোতে পানি উপচে পড়ছে। এতে লক্ষ্মীপুরপৌরসভার জে বি রোড, সমসেরাবাদ, লামচরী, মধ্য বাঞ্চানগর, পশ্চিম লক্ষ্মীপুর, মেঘনা রোড, রাজিব পুর, শিশু পার্ক, কালু হাজীসড়ক ও লাহারকান্দি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ পানিবন্দিহয়ে আছে।

    খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারত থেকে আসা পানিতে নোয়াখালী ওফেনীতে যখন বন্যা তখন লক্ষ্মীপুরে প্রবল বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টিহয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়ে মানুষ। এ বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েরামগতি ও কমলনগর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের বহু মানুষ প্রায় ১মাসজুড়ে পানিবন্দি হয়ে রয়েছেন। সদর, রায়পুর, রামগঞ্জের বিভিন্নইউনিয়নে পানিবন্দি হয়ে পড়েছিল মানুষ।

    সর্বশেষ গত শুক্রবার নোয়াখালীর বন্যার পানি লক্ষ্মীপুরে ঢুকে পড়ে।এতে লক্ষ্মীপুরও এখন বন্যা কবলিত। এর মধ্যে শনিবার রাতেইপ্রায় ৩ ফুট পানি বেড়ে গেছে বন্যাকবলিত এলাকায়। রহমতখালীখাল হয়ে মেঘনা নদীতে যেন বানের পানি নেমে যেতে পারে সেজন্যমজু চৌধুরীর হাটের দুটি সুইস গেট সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেপানি উন্নয়ন বোর্ড। এরপরও কোথাও যেন পানি কমছে না।

    উল্টো সময়ে সাথে সাথে বানের পানি বেড়ে চলেছে। একই সঙ্গেবৃষ্টিও হচ্ছে লক্ষ্মীপুরের সর্বত্র। এতে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষেরমাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

    এমন পরিস্থিতিতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবংজেলা বিএনপি, জামায়াত ইসলামীসহ বিভিন্ন সামাজিক ওস্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতারা দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে ত্রাণবিতরণ করছেন বন্যার্তদের মাঝে। তবে অনেকেই এখনো ত্রাণপাননি বলে জানান।

    সোমবার (২৬ আগস্ট) সকালে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকাগিয়ে পানিবন্দি মানুষের সাথে কথা হলে তাঁরা জানান, গত ৮ দিনধরে তাদের বাড়িঘরে বৃষ্টির পানি জমে ছিল। ওই পানি না নামতেইগত ৪ দিন ধরে হঠাৎ করে পানি বাড়তে থাকে।

    শনিবার সারাদিন বৃষ্টি না হলেও রাতে বৃষ্টি হয়। তবে বৃষ্টিরপাশাপাশি নোয়াখালীর বন্যার পানি এদিকে চাপ দেয়। এখনপ্রত্যেকটি বাড়ি ৩-৪ ফুট পানিতে তলিয়ে আছে। ঘর-বাড়িতে থাকারকোনো পরিস্থিতি নেই। যাদের ঘরের ভিটা উঁচু তারাই শুধু বাড়িঘরেথেকে গেছে। আর অন্যরা আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি ও আশ্রয়ণ কেন্দ্রেঠাঁই নিয়েছে।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ইউনুসমিয়া জানান, এখন পর্যন্ত ২৩ হাজার ৪০৪ জন মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রেআশ্রয় নিয়েছে। বন্যার্তদের মাঝে ৫০৯ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১০লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে শুকনো খাবারবিতরণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

    লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ জামানখান বলেন, সদরের রহমতখালী খাল, রামগতি, কমলনগরের ভুলুয়ানদী ও ওয়াপদার খাল গুলো দিয়ে বন্যার পানি ঢুকায় লক্ষ্মীপুরেরলোকালয়ে পানি বেড়েছে।

    এছাড়া রোববার লক্ষ্মীপুরে ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, এতেও পানিবৃদ্ধি পাচ্ছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে নদীতে ভাটা এলে সব কটি সুইটগেট খুলে দেওয়া হয়। আবার জোয়ারের সময় গেটগুলো বন্ধ করেদেওয়া হচ্ছে।

    লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান বলেন, পানিবন্দী হয়েআট লাখ মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। জেলার পাঁচটি উপজেলাইক্ষতিগ্রস্ত। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গত এলাকার লোকজনকে শুকনাখাবার সহ ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। যারা আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে, তাঁদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।

    শীর্ষ সংবাদ ডেস্কঃ

    শীর্ষ সংবাদ ডেস্কঃ

    প্রতিবেদক

    ঢাকা

    সর্বমোট নিউজ: 715

    Share this...

    বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
    ঢাকা অফিসঃ ১৬৭/১২ টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল ঢাকা- ১০০০ আঞ্চলিক অফিস : উত্তর তেমুহনী সদর, লক্ষ্মীপুর ৩৭০০
    biggapon ad advertis বিজ্ঞাপন এ্যাড অ্যাডভার্টাইজ
  • আমাদেরকে ফলো করুন…