‘মেয়েকে বিয়ের পর থেকে নির্যাতন করতো। কখনো সুখ দেয়নি। ছেলের (মেয়ের স্বামী) অন্য মেয়েদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। আমার মেয়ে প্রতিবাদ করলে মারধর আরও বেশি করতো। এসব বিষয় নিয়ে একাধিক শালিসী বৈঠক হয়েছে। তারপরেও সে সুধরায়নি।
গতকাল বুধবার বিকালে মেয়ের সঙ্গে সর্বশেষ মোবাইলে কথা হয়েছিলো। তখন মেয়ে বলছে, তাঁর স্বামী তাকে আমাদের বাড়িতে অসুস্থ ছোট বোনকে দেখতে আসতে দিবে না। যদি আসতে হয় তাহলে লাশ হয়ে যেতে হবে। সত্যি সত্যি আজ লাশ হয়ে আসছে আমার মেয়ে। আমার মেয়েকে তাঁর স্বামী হত্যা করে এখন আত্মহত্যার নাটক সাজাচ্ছে। আমি এ হত্যার বিচার চাই।’
বৃহস্পতিবার (৫ জুলাই) হাসপাতালের সামনে কান্না জড়িত কণ্ঠে এভাবে কথাগুলো বলছেন নিহত গৃহবধুর মা সাজু বেগম।
ওই গৃহবধূ সদর উপজেলার টুমচর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডস্থ সুলতান মাঝি বাড়ীর মো. আলমগীরের মেয়ে এবং একই এলাকার খোকনের ছেলে কামরুল হাসান সুমনের স্ত্রী।
জানা গেছে, প্রায় ৪ বছর পূর্বে সালমাকে বিয়ে করে সুমন। তাদের দুই বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। যদিও বিয়েতে সালমার পরিবারের সম্মতি ছিল না। তবুও কৌশলে তাকে বাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করে খোকন। তবে বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সালমাকে মারধর করতো স্বামী। এরমধ্যে সালমার অগোচরে আরেকটি বিয়ে করে সে। বিষয়টি জানাজানি হলে এর প্রতিবাদ করে নিহত গৃহবধূ। তখন নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
এদিকে এ ঘটনায় স্বামী কামরুল হাসান সুমনকে আটক করে পুলিশ। বর্তমানে তিনি পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন।
নিহত গৃহবধূর স্বজনরা জানান, ঘটনার দিন সকালে খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে সালমার মরদেহ দেখতে পান। এসময় তাঁর পুরো শরীরে আঘাতের চিহৃ ছিল। তাকে নির্যাতন করে মারা হয়েছে।
আরও বলেন, সালমা আত্মহত্যা করেনি। তাকে হত্যা করে এখন আত্মহত্যার নাটক সাজাচ্ছেন তাঁর শ্বশুর বাড়ীর লোকজন। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। আমরা হত্যাকারীর ফাঁসি চাই।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. অরুপ পাল বলেন, হাসপাতালে গৃহবধূকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। তাঁর হত্যার কারন ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।
এবিষয়ে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, রিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে স্বামীকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।