লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মেঘনা নদী সংলগ্ন খালপাড়ে ৫’শ মিটারের একটি রাস্তা নির্মাণে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির (কাবিখা) আওতায় শ্রমিকদের ব্যবহারের কথা থাকলেও ব্যবহার করা হচ্ছে মাটিকাটার এক্সকাভেটর মেশিন (ভেকু মেশিন)।
উপজেলার দক্ষিন চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়া গ্রামের পানিরঘাট এলাকায় এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
তারা জানান, গত ৭ দিন ধরে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সদর উপজেলা মজুচৌধুরীর লঞ্চ ঘাট থেকে আনা এক্সকাভেটর মেশিন দিয়ে রাস্তা সংস্কার করে চলেছেন প্রকল্পটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সংরক্ষিত নারী সদস্য ফাতেমা বেগম।
স্থানীয়রা বলছেন, শ্রমিকের কাজ মেশিনে করিয়ে লাভবান হচ্ছেন প্রকল্প সভাপতি। আর এলাকার শ্রমজীবী মানুষ হচ্ছে বঞ্চিত।
দক্ষিন চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে কাবিখা কর্মসূচির আওতায় গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার প্রকল্পে দক্ষিন চরবংশী ইউপির চরকাছিয়া গ্রামের পানিরঘাট এলাকায় ৫০০ মিটার রাস্তা সংস্কারের কাজে দিনে ২৫ জন শ্রমিক মোট ৭ দিনে চার লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
রাস্তা সংস্কারে শ্রমিক দিয়ে মাটি কাটার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই অধিক লাভের আশায় এক্সকাভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কেটে রাস্তা সংস্কারের কাজ করাচ্ছেন। ফলে দুর্ভোগ ও ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থানীয় কৃষক, শ্রমিক সহ হতদরিদ্ররা।
চরকাছিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম ও হাসেম মাঝি বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। কামলা খেটে খাই। মেশিন দিয়ে মাটি কাটলে তো আমাদের পেটে লাথি পড়ে।’
একই এলাকার সমাজ সেবক বিএম রাহুল বলেন, ‘বছরের এই সময়ে চরাঞ্চল মানুষের কাজকাম কম থাকে। এতে বিপাকে পড়ে গরিব মানুষ। প্রকল্পটির সভাপতি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মেশিন দিয়ে মাটি কেটে রাস্তা সংস্কার করছেন।’ রাস্তার ধার থেকে মেশিন দিয়ে গভীর করে মাটি খনন করায় খাল পাড়ের রাস্তা ধসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া জমির মালিকও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
এ বিষয়ে সংরক্ষিত ইউপি সদস্য ও প্রকল্পটির সভাপতি ফাতেমা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, ‘এক্সকাভেটর মেশিন দিয়ে কম খরচে বেশি মাটি কাটা যায় বলে এমনটা করা হয়েছে।’ আগামিতে এভূল আর হবেনা, আমি দুঃখিত।
দক্ষিন চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কর্মসূচিতে এক্সকাভেটর মেশিন ব্যবহারের কোনো নিয়ম নেই। আমি যতদূর জানি ওই প্রকল্পটি স্থানীয় শ্রমিকদের দিয়ে করানোর কথা। তবে কীভাবে মেশিন দিয়ে করানো হচ্ছে, সেটা বোধগম্য নয়।’
রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমা বিনতে আমিন বলেন, যেকোনো প্রকল্পের একটি নিজস্ব নিয়মনীতি রয়েছে। সেই নিয়মের মধ্যে সেটি হতে হবে। বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত হলাম। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।