‘স্বতন্ত্র বা লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীকে ভোট দিলে ভোটটা নষ্ট হবে’ দাবি করে বক্তব্য দিয়েছেন লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর ও সদরের একাংশ) আসনে নৌকার প্রার্থী অ্যাডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন।
রোববার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে রায়পুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে নৌকার নির্বাচনী সভায় তিনি এ বক্তব্য দেন। ৬ মিনিট ১১ সেকেন্ডের ভিডিও বক্তব্যটি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়েছে।
বক্তব্যে নয়ন বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নাই। এজন্য ধানের শীষের সঙ্গে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই। এবার যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে, সেখানে সরকার গঠন করবে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী হবে শেখ হাসিনা। যারা ভোট বুঝে, ভোট সচেতন তারা সবাই জানে। এবং এখানে বিরোধী দলের নেতা হবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। ক্ষমতায় যাবে নৌকা, বিরোধী দলে থাকবে লাঙ্গল।’
নির্বাচনী সভায় তিনি আরও বলেন, ‘নৌকায় যদি আপনারা ভোটটা দেন, আপনাদের বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা বাড়বে। ১০ কেজি চাউলের কার্ড বাড়বে। রাস্তাঘাটের উন্নয়ন বেশি হবে। মসজিদ-মাদরাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন বেশি হবে। যদি নৌকা বাদ দিয়ে অন্য কাউকে ভোট দেন তাহলে তারা আপনাদের কোনো উন্নয়ন কাজ করতে পারবে না। কারণ স্বতন্ত্র অথবা লাঙ্গল সরকারে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। যেহেতু সারাদেশে তাদের ওইরকম ভোট নাই। স্বতন্ত্র মার্কা থেকে প্রধানমন্ত্রী হবে না, কোনো মন্ত্রীও হবে না। লাঙ্গল মার্কায় প্রধানমন্ত্রী হবে না। কোনো মন্ত্রীও হবে না। তাহলে আপনারা স্বতন্ত্র এবং লাঙ্গলে ভোটটা দিলে আপনাদের ভোটটা নষ্ট হবে। অর্থাৎ এখানে এমপি থাকা আর না থাকা হবে সমান।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন রায়পুর পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট ও রায়পুর পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কাজী জামশেদ কবীর বাকী বিল্লাহ।
নয়ন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও লক্ষ্মীপুর-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য (এমপি)। এ আসনের সাবেক এমপি কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল কুয়েতে দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার পর ২০২১ সালের ২১ জুনের উপনির্বাচনে নৌকা প্রতীকে এমপি নির্বাচিত হন নয়ন।
নৌকায় ভোট চেয়ে নয়ন বলেন, “সম্প্রতি আগে শিক্ষামন্ত্রী এসে রায়পুর সরকারি কলেজের ছয়তলা ভবন উদ্বোধন করেছেন। আলিয়া মাদরাসায় চারতলা ভবন উদ্বোধন করেছেন। সেখানে নৌকার এমপিকেই দেখেছেন সবাই। স্বতন্ত্র বা লাঙ্গলের এমপিকে দেখেন নাই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসেছেন রায়পুর থানাকে মডেল থানায় উন্নীত করার জন্য। সেখানেও আপনারা স্বতন্ত্র কিংবা লাঙ্গল মার্কার কোনো এমপিকে দেখেননি। গ্রামের ভাষায় একটি কথা আছে ‘ছাগলের যদি তিনটা বিয়ায়, দুধ খায় দুইটা’। বাকি একটা উলালে (আনন্দে) নাচে, দুধ খাইতে পারে না’। দেশে ভোট হচ্ছে নৌকা আর লাঙ্গলের। দুধ খাইবো নৌকা। পরে যদি কিছু থাকে খাবে লাঙ্গলে। এক পার্টি যাবে ক্ষমতায়, আরেক পার্টি বিরোধী দলীয় নেতা হবে। স্বতন্ত্ররা কি এদেশে প্রধানমন্ত্রী হবেনি? দেশের কোনো মন্ত্রীও হবে না। এরা নিজেরাই দুধ খাইতে পারবে না, আমাদের কী খাওয়াবে? দুধ যদি খাইতে চান, তাহলে মার্কা নৌকা।”
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়নের সঙ্গে ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ আসনে নয়নের স্ত্রী রুবিনা ইয়াছমিন লুবনাও (তরমুজ) স্বতন্ত্র প্রার্থী। তবে তার প্রচার-প্রচারণা দেখা যায়নি।
অন্যরা হলেন স্বতন্ত্র এএফ জসিম উদ্দিন আহমেদ (ট্রাক), সেলিনা ইসলাম (ঈগল), জাতীয় পার্টির বোরহান উদ্দিন আহমেদ (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিনা ইসলাম (ঈগল), জাসদের আমীর হোসেন (মশাল), তৃণমূল বিএনপির আব্দুল্লাহ আল মাসুদ (পাট), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির জহির হোসেন (একতারা), বাংলাদেশ কংগ্রেস জোটের মনসুর রহমান (ডাব), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মোরশেদ আলম (চেয়ার), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের শরিফুল ইসলাম (মোমবাতি), মুক্তিজোটের ইমাম উদ্দিন সুমন (ছড়ি) ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির ফরহাদ মিয়া (হাত ঘড়ি)।