নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসতে পারলে মানুষ পোড়ানোর হুকুম দেওয়ার জন্য বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে লন্ডন থেকে দেশে এনে শাস্তির মুখোমুখি করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) বেলা ১২টার দিকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা সদরের শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ মাঠে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় এ কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন— মালয়েশিয়ায় ২৫২ জন বাংলাদেশিসহ ৫৬৭ অভিবাসী আটক
এ সময় শেখ হাসিনা হুঁশিয়ারি দিয়ে আরও বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের চক্রান্তের সমুচিত জবাব ৭ জানুয়ারি ভোটের মধ্য দিয়ে দেওয়া হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ফিলিস্তিনিতে যেভাবে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে ঠিক একই কাজ করছে তারেক জিয়া। অ্যাম্বুলেন্সে রোগী যায়, তার ওপর হামলা, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, পুলিশের ওপর হামলা, পিটিয়ে পুলিশকে হত্যা করা—বাংলাদেশে এই সমস্ত দুর্বৃত্তায়ন চলবে না।’
তারেকের মতো একজন লম্পটের নির্দেশে বিএনপি নেতারা কেন আগুন দিচ্ছে?- এই প্রশ্ন তুলে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘মানুষ খুন করাই তাদের রাজনীতি। টাকা লুটপাট করে বিদেশে বসে মানুষ খুন করার নির্দেশ দিচ্ছে। বিএনপি দেশের উন্নয়ন করতে জানে না তারা শুধু মানুষ পোড়াতে জানে, তাদের কোনো মনুষ্যত্ব নেই।’
আরও পড়ুন— যুদ্ধাহত ও শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারকে উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে সবকিছুর জবাব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি চাই নির্বাচনটা খুব শান্তিপূর্ণভাবে হোক। চক্রান্তের সমুচিত জবাব ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে আমরা দেবো, যে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না।’
নির্বাচন বানচালে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘নির্বাচন বানচাল করার অনেক ষড়যন্ত্র এবং এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে অনেকে আন্তর্জাতিকভাবেও জড়িত। আমাদের দেশের নির্বাচন হবে না, এখানে তারা তৃতীয় পক্ষ আনবে। তৃতীয় পক্ষ কী করতে পারে? দেশের কোনো উন্নতি করতে পারে না।’
‘২০০৭ সালে আপনারা দেখেছেন কী করেছে। তার আগে তো জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া এসেছিল। দেশের মানুষের তো কোনো ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি। মানুষ তো অন্ধকারে ছিল।’
আরও পড়ুন— বিকেলে ৬ জেলায় নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য দেবেন শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনা বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মর্যাদা পেয়েছে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যাত্রা শুরু করবে ২০২৬ সালে। আর এই যাত্রায সফল করতে পারে একমাত্র আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কেউ পারবে না। কারণ সেই যোগ্যতাই নাই বিএনপি-জামায়াতের। বিএনপি খুনিদের পার্টি আর জামায়াত যুদ্ধাপরাধী পার্টি।’
বিদেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে এনে বিচারের রায় কার্যকর করতে সরকারের প্রচেষ্টা চলমান আছে বলেও জানান বঙ্গবন্ধু কন্যা।
এ সময় দেশের মানুষের প্রতি তার নিবেদিতপ্রাণ কাজ করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বারবার হত্যা করার জন্য আঘাত এসেছে। কিন্তু আমি ঘাবড়ে যাইনি। কারণ আমার জীবনটা উৎসর্গ করেছি এদেশের মানুষের জন্য।’
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে মঞ্চে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাতে জাতীয় পতাকা নেড়ে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে তিনি জানান, ছোট বোন শেখ রেহানা না থাকলে আমি দেশের জন্য উন্নয়ন করতে পারতাম না।’