চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে নয়া দিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে কোনো রাজনৈতিক আলোচনা হবে না, বরং দ্বিপক্ষীয় খুঁটিনাটি বিষয়ের আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হবে না বলে মনে করছেন তিনি।
সোমবার (২০ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন আগামী ২৪ নভেম্বর নয়া দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার সঙ্গে যৌথ পরামর্শক বৈঠকে বসবেন।
আরও পড়ুন— সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীতে ৩ বাসে আগুন
বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে কোনও রাজনৈতিক আলোচনা হবে কি না— এমন প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পররাষ্ট্র সচিবের ওটাতে (বৈঠক) নির্বাচন নিয়ে আলাপ হবে না। অন্যান্য খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আলাপ হবে। ওদের (ভারত) সঙ্গে নির্বাচনের আলাপ তো হয়েই গেছে। এটা তো আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী তারা আলাপ করেছেন। আমরা অনেক দেশের সঙ্গে ফরেন অফিস কনসালটেশন করি। এটা আমাদের এফওসি। রুটিন ম্যাটার।’
দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে কী ধরনের আলাপ হয়েছে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ভারত এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা চায়, আমরাও চাই এটা।
নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়েও আলাপ হবে না। অন্যান্য মিটিগ্রিটি ইস্যুগুলো আলোচনা হবে। এ অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা চায় ভারত, আমরাও চাই। তারা চায় বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক যে প্রসেসটা আছে সেটি সমুন্নত থাকুক। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যেন কোনো রকমের ভাটা না পড়ে।’
আরও পড়ুন— রায়পুরে এসএসসির ফরম পূরণে বাড়তি টাকা আদায়
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পররাষ্ট্র সচিবের নয়া দিল্লি সফর রাজনৈতিক বিবেচনায় বেশ গুরত্বপূর্ণ। বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্কের সামগ্রিক ইস্যুতে আলোচনা হবে। আশা করা হচ্ছে, মোমেন-কোয়াত্রা বৈঠকে অমীমাংসিত ইস্যুগুলোর মধ্যে-পানি বণ্টন; বিশেষ করে তিস্তা ইস্যু এবং প্রতিরক্ষা, জ্বালানি, বাণিজ্য, বিদ্যুৎ ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। এর বাইরে রাজনৈতিক ইস্যুতে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ আসার সম্ভাবনা থাকবে।
সম্প্রতি নয়া দিল্লিতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে আলোচনায় ছিল বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ। ওই বৈঠকে নয়া দিল্লির পক্ষ থেকে ওয়াশিংটনকে জানানো হয়েছে, নির্বাচন কীভাবে হবে তা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে বাংলাদেশ নিয়ে নয়া দিল্লির অবস্থানের বিষয়ে এখনো খোলামেলা কোনো মন্তব্য করেনি ওয়াশিংটন। কিন্তু বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ওয়াশিংটন যে নয়া দিল্লির সঙ্গে একমত নয়, তা ইতোমধ্যে কিছুটা হলেও স্পষ্ট হয়ে গেছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় বাংলাদেশ-ভারতের এফওসি অনুষ্ঠিত হয়। আট মাসের ব্যবধানে দেশটির সঙ্গে এফওসি করতে যাচ্ছে ঢাকা। এর আগে ভারত ছাড়া অন্য কোনো দেশের সঙ্গে এত কম সময়ের ব্যবধানে এফওসির নজির বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নেই। তবে দু’টি দেশ প্রয়োজন মনে করলে যেকোনো সময় এটি করতে পারে বলে মত সংশ্লিষ্টদের।