প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কারখানা ভেঙে, সেখানে অস্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টি করে দেশের ক্ষতি করলে নিজেরই ক্ষতি হবে। আর কারখানা বন্ধ করলে গ্রামে ফিরে যেতে হবে।’
শনিবার (৪ নভেম্বর) মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন উপলক্ষে রাজধানীর আরামবাগে আওয়ামী লীগ আয়োজিত ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে চলমান পোশাকশ্রমিক আন্দোলন প্রসঙ্গে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।
সমাবেশে আওয়ামী লীগ সরকারের ১৯৯৬ আমলে পোশাকশ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছিল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। এরপর ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পরও বেতন বাড়ানোর কথা উল্লেখ করেন তিনি।
আরও পড়ুন— দেড় কোটি টাকার অবৈধ মাদকদ্রব্য ধ্বংস করলো রামগড় ৪৩ বিজিবি
শ্রমিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে কারখানা আপনাদের রুটি-রুজি দেয়, শ্রম দিয়ে পয়সা কামাই করেন, সেই কারখানা ভাঙচুর করলে আল্লাহ্ও নারাজ হবে। আপনাদের যা প্রয়োজন হয়, অসুবিধা আমরা দেখি।’ এ সময় কারখানায় শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় ছিল তখন তো কিছু করেনি। যা করেছে আওয়ামী লীগ সরকারই। আওয়ামী লীগ জানে মানুষের কষ্ট দূর করতে।’
শেখ হাসিনা শ্রমিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘অন্যের কথায় নেচে কারখানায় হামলা করে, কারখানা ভেঙে, সেখানে অস্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টি করে দেশের ক্ষতি করলে নিজেরই ক্ষতি হবে। আর কারখানা বন্ধ করলে ওই গ্রামেই ফিরে যেতে হবে। বিনা কাজে জীবনযাপন করতে হবে।’
আরও পড়ুন— মেট্রোরেলে চড়ে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল গেলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, ‘মজুরি কমিশন বসেছে। ধৈর্য ধরতে হবে। কারা উসকানি দিচ্ছে, সেটা আমরা জানি। যারা ভাঙচুরে জড়িত, বিএনপির নেতা-কর্মীদের বলব হুকুমদাতা দেশেই থাকুক আর বিদেশেই থাকুক, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি আর ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ গ্রহণ করে হুকুম জারি করে। বিদেশ থেকে ধরে এনে বাংলাদেশে শাস্তি দেব ওই কুলাঙ্গারকে। কেউ ছাড় পাবে না।’
দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত যেন দেশের মানুষকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে মারতে না পারে, অত্যাচার করতে না পারে তার জন্য সজাগ থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে কাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, সেটা আমরা ঠিক করে দেব। যাকে মনোনয়ন দেব, ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে কাজ করতে হবে। যেন আবার আমরা এ দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারি। এখনো অনেক উন্নয়নের কাজ বাকি। সেগুলো যেন সম্পন্ন করতে পারি। কারণ, ওই সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদীরা আসলে এ দেশকে টিকতে দেবে না। সে জন্য জনগণের স্বার্থে, কল্যাণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং নৌকা মার্কাই পারে স্বাধীনতা, উন্নয়ন দিতে।’
আরও পড়ুন— ইসির সঙ্গে সকালের সংলাপে অংশ নিলো আঃলীগসহ ১৩ দল
ঢাকাবাসীর উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নৌকা মার্কায় ভোট পেয়েছি বলেই আজকে এত উন্নতি হচ্ছে। সেই কথাটা যেন তারা মনে রাখে। সেটা মনে রেখেই, আগামী নির্বাচনের তফসিল যেকোনো সময় ঘোষণা হবে। আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিয়ে, যাকেই প্রার্থী করি সেটা কানা, খোঁড়া যে-ই হোক তাদের নৌকায় মার্কায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। করবেন কি না হাত তুলে ওয়াদা করেন।’
এ সময় উপস্থিত জনতা হাত নেড়ে সমর্থন জানান। প্রধানমন্ত্রী তখন বলেন, ‘এবার নৌকা জিতবে। এ দেশের মানুষ যেন উন্নত জীবন পায় সেটাই চাই।’