ভারতীয় সহায়তায় বাস্তবায়িত তিনটি উন্নয়ন প্রকল্প যৌথভাবে উদ্বোধন করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
বুধবার (১ নভেম্বর) গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং নয়াদিল্লি থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রকল্প তিনটি উদ্বোধন করেন।
প্রকল্প তিনটি হলো আখাউড়া-আগরতলা আন্তঃসীমান্ত রেল সংযোগ; খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইন এবং বাগেরহাটের রামপাল মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের ইউনিট-২। তিনটি প্রকল্পই ভারতের অর্থায়নে বাস্তবায়ন হয়েছে।
আরও পড়ুন— বেঁধে দেওয়া মূল্যের দ্বিগুণ দামে আলু-পেঁয়াজ বিক্রি
খুলনা-মোংলা রেলপথটি আজ উদ্বোধন হলেও কবে নাগাদ এই পথে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হবে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
এই বিষয়ে খুলনা-মোংলা রেলসংযোগ প্রকল্পের পরিচালক মোঃ আরিফুজ্জামান বলেন, কবে থেকে এই পথে যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করবে তা সিদ্ধান্ত হলে জানানো হবে।
আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মিয়া জানান, উদ্বোধনের পর প্রথম দিকে পণ্যবাহী ট্রেন এবং পরে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করবে দুই দেশের মধ্যে। ইতোমধ্যে ২টি রেলপথ নির্মাণ শেষে পথগুলোতে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেনটি চালানো সম্পন্ন হয়েছে।
রেলওয়ের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, ৬৪ কিলোমিটার দীর্ঘ খুলনা-মোংলা রেলপথ। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের ‘ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড’ হিসেবে ধরা আছে। সব মিলিয়ে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন— নির্বাচন হবে যথাসময়েঃ প্রধানমন্ত্রী
অন্যদিকে আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলসংযোগ নির্মাণ (বাংলাদেশ অংশ) প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণের জন্য ২০১৮ সালের ২১ মে ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি হয়। দুই দেশের মধ্যকার এই রেলপথের দৈর্ঘ্য ১২.২৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে রয়েছে ৬.৭৮ কিলোমিটার। প্রকল্পটি (বাংলাদেশ অংশ) বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ২৪১ কোটি টাকা।
২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় এই রেলপথ নির্মাণের বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়। রেলপথটি আগরতলা থেকে পশ্চিমবঙ্গে ভ্রমণের সময় ও দূরত্ব কমিয়ে দেবে। প্রকল্পটি চালু হলে ৩১ ঘণ্টার পরিবর্তে এ পথে সময় লাগবে ১০ ঘণ্টা। আগরতলা থেকে কলকাতার দূরত্ব ১ হাজার ৬৫০ কিলোমিটার থেকে কমে দাঁড়াবে মাত্র ৫১৩ কিলোমিটারে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে পর্যটন ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।