লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে খালার সহায়তায় কিশোরীরকে (১৭) জোরপূর্বক ধর্ষণ এবং দেহ ব্যাবসা চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিবারের সদস্যদের নির্যাতনে ভয়ে ৬দিন পলাতক থাকার পর রোববার সন্ধায় (৩ সেপ্টেম্বর) ওই কিশোরী আপন খালা ও বাবার বিরুদ্ধে সহকারি পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছেন। তার নিরাপত্তা চেয়ে ঢাকায় খালার বাসায় থাকার অনুরোধ জানায় মেয়েটি। ঘটনাটি ঘটেছে গত রবিবার (২৭ আগষ্ট) রাতে দক্ষিন চরবংশী ইউপির চরকাছিয়া গ্রামের মিয়ারহাট এলাকায়।
এঘটনায় রবিবার রাতে কিশোরীর মা-বাবা ও খালাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদেরকে বিদায় করে কিশোরীকে আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানার নারী ও শিশু কক্ষে (শেফ হোম) রেখেছেন সহকারি পুলিশ সুপার ও ওসি।
ক্ষতিগ্রস্থ্য কিশোরী জানায়, রায়পুরের মেঘনার দূর্গম চরে বায়রাঘাটে তাদের জেলে পরিবারের বসবাস। চরে সে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। তারা এক ভাই ও এক বোন। গত ২৭ আগষ্ট দক্ষিন চরবংশী ইউপির মিয়ারহাট এলাকায় তার খালার বাড়িতে বেড়াতে যায়। রাতে কিশোরী দেখে তার পাশে অচেনা এক যুবক (৩৫)। সে চিৎকার করলে মূখ চেপে দুইবার ধর্ষণ করে ওই যুবক। এঘটনা সে তার খালাকে জানালে ধমক দিয়ে চুপ করে রাখে।
আরও পড়ুন- গোবিন্দগঞ্জে গ্যারেজের চৌবাচ্চা থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার
পরদিন কিশোরী বাড়ীতে এসে তার মা- বাবাকে এঘটনা জানালে কাউকে না বলার জন্য চাপসৃষ্টি ও বেদম মারধর করে নাক ফাটিয়ে দেয় তারা। এঘটনা বিচার না পেয়ে পরদিন ২৮ আগষ্ট বাড়ী থেকে পালিয়ে মোল্লারহাট এলাকায় তৃতীয়লীঙ্গের এক নারীর কাছে ৫দিন থাকার পর রোববার দুপুরে (৩ সেপ্টেম্বর) রায়পুরের সহকারি পুলিশ সুপারের কাছে বাবা ও খালার বিরুদ্ধে অচেনা যুবক দ্বারা ধর্ষণে সহায়তা এবং দেহ ব্যাবসা করার চেষ্টার অভিযোগ করেন ক্ষতিগ্রস্থ্য কিশোরী।। সে শারীরীভাবে খুবই অসুস্থ্য বলেও জানান।
রবিবার সন্ধায় সহকারি পুলিশ সুপার ওই কিশোরীর মা-বাবা ও খালাকে থানায় হাজির করেন। মেয়েটির বাবা বলেন, গত ৮ দিন আগে তার মেয়ে বাড়ী থেকে নিখোঁজ হলে রায়পুরের হাজিমারা পুলিশ ফাঁড়িতে সাধারন ডায়রী করেন। পুলিশ মেয়েটির সন্ধান করে তৃতীয় লীঙ্গের এক নারীর সাথে রয়েছে বলে নিশ্চিত হন এবং তাকে ফাঁড়িতে আসার জন্য বলা হলেও মেয়েটি না গিয়ে তার বাবা ও খালার বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগ করেছেন ।
আরও পড়ুন- এমপির বিরুদ্ধে মানহানিকর সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে বিক্ষোভ
রোববার রাতে মা-বাবা-খালাকে সাংবাদিক ও স্বজনদের সামনে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের ছেড়ে দেয়া হয় এবং আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কিশোরীকে থানার শেফহোমে রাখা হয়। ধর্ষণের ঘটনা নিশ্চিতের জন্য কিশোরীকে সদর হাসপাতালে মেডিকেল চেকআপ এবং এঘটনায় ধর্ষক ও অভিযুক্ত খালাকে (৩০) আটক করা হবে বলেও পুলিশ জানান।
সহকারি পুলিশ সুপার ( রায়পুর ও রামগঞ্জ থানার সার্কেল) শেখ সাদী বলেন, মেয়েটি তার গ্রামের মাদরাসা পড়ুয়া এক ছেলের সাথে সম্পর্ক এবং ছেলেকেই বিয়ে করতে চায়। এতে তার পরিবার রাজি হয়নি। অপরদিকে-নদীর পাড়ে খালার বাড়ীতে বেড়াতে গেলে খালারই সহায়তায় অচেনা যুবকের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় মেয়েটি। দুটি ঘটনায় আমরা মেয়েটির মা, বাবা ও খালাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেই। মেয়েটিকে আরো জিজাসাবাদের প্রয়োজন ও মেডিকেল করানো হতেও পারে, সে জন্যে তাকে থানাতে রাখা হয়।
