বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ (চার্জ) গঠন বাতিল চেয়ে রিভিশন আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে।
সোমবার (২৮ আগস্ট) শুনানি শেষে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মোঃ আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চে আদেশের জন্য বুধবার (৩০ আগস্ট) দিন করেছেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোঃ খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদি হাসান চৌধুরী।
গত ৯ আগস্ট এ আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়েছিল।
এর আগে ১৭ মে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষে এ আবেদন করেছেন আইনজীবী কায়সার কামাল।
১৯ মার্চ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আট আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের ২ নম্বর ভবনে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান। সেদিন খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার জানিয়েছেন তিনি খালেদা জিয়ার পক্ষে হাজিরা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন- অনলাইন থেকে তারেক রহমানের সব বক্তব্য সরানোর নির্দেশ
এ সময় বিচারক আসামিদের কাছে জানতে চান, তারা দোষী না নির্দোষ? অন্য আসামিরা নিজে এবং খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চান। এরপর আদালত তাদের বিরুদ্ধে চার্জগঠনের আদেশ দেন।
বিচার শুরু হওয়া অন্য আসামিরা হলেন, তৎকালীন মুখ্যসচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, সেলিম ভূঁইয়া এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
অপরদিকে আসামিদের মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মোঃ শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে করা চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি সৃষ্টি এবং দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরপর ২০১৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ আরও ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
দুদকের করা অপর দুই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। সেখান থেকে পরে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায়ই সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান। বর্তমানে তিনি নিজ বাসায়ই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।