হালকা বাতাসেই কেঁপে ওঠে ভবন। একাধিক স্থানে ফাটল। তা দিয়ে বৃষ্টির পানি চুইয়ে পড়ে। নষ্ট করে দেয় আসবাব। পরগাছাগুলো দেয়াল ভেদ করে ছড়িয়ে পড়েছে ভবনজুড়ে। দেয়াল, সিঁড়ি, ছাদ ধসে পড়ার উপক্রম। এক বছর আগে পরিত্যক্তও ঘোষণা করা হলেও বিকল্প না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ৮০ বছরের পুরোনো ভবনে কর্যক্রম চলছে। এ চিত্রটি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর-পানপাড়া আঞ্চলিক সড়কের পাশে সরকারি কলেজ সংলগ্ন কেরোয়া ভূমি কার্যালয়। যে কোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় কর্মকর্তা-কর্মচারিরা।
গত বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) উপজেলার সাতটির ভূমি কার্যালয়ের মধ্যে চারটিতে সরজমিন গিয়ে দেখা যায় কার্যালয়গুলোর করুন অবস্থা। সাতটি কার্যালয় হলো- উত্তর ও দক্ষিণ চরআবাবিল ২টি ইউনিয়নের জন্য ১টি ভবন (হায়দরগঞ্জের বাংলাবাজার এলাকায় নতুন ভবনে কার্যক্রম চলছে), উত্তর ও দক্ষিণ চরবংশি ২টি ইউনিয়নের জন্য ১টি ভবন (উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের দুটি কক্ষ নিয়ে ব্যবহার করা হয়), চরমোহনা ইউনিয়নে ১টি (খাসেরহাট সড়কের পাশে নতুন ভবন), সোনাপুর ইউনিয়নের জন্য ১টি (রাখালিয়া বাজারে প্রধান সড়কের পাশে সেমিপাকা টিনসেড ঘরে কার্যক্রম চলে), পৌরসভার নতুনবাজার সংলগ্ন শহিদ মিনারের পিছনে ১টি (নতুন ভবন), বামনী ইউনিয়নে ১টি (বাংলাবাজার এলাকায় পরিষদ ভবনের দুটি কক্ষ নিয়ে কর্যক্রম চলে) এবং কেরোয়া ইউনিয়নে ১টি সরকারি কলেজ সংলগ্ন (এটি এক বছর আগে ঝুকিপুর্ণ-পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়েছে)।
আরও পড়ুন- কুলাউড়ায় ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযান, আটক ১৩
ভূমি সেবা নিতে আসা পৌরসভার কাউন্সিলর রুবেল প্রধানিয়া বলেন, “যে কোন সময় ভবনটি ধ্বসে পুকুরে পড়ে যাবে। তিনটি কক্ষ পরিত্যাক্ত হওয়ায় তা তালাবদ্ধ রেখে ঝুঁকি নিয়ে একটি কক্ষে কাজ করছে কর্মচারীরা। আমি কয়েকবার এসে তাড়াহুরো করে সেবা নিয়ে চলে গেছি। যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটবে।’
কেরোয়া ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারি জাহাঙ্গির আলম বলেন, ‘আমি গত জানুয়ারীতে যোগদান করেছি। এসেই দেখি যেকোন সময় ভবন ধ্বসে পড়বে। এখন তিনটি কক্ষ ও ঝুকিপুর্ণ ও পরিত্যাক্ত হওয়ায় এক কক্ষে চারজন কর্মকর্তা ও কর্মচারি কাজ করছি। প্রায় ৮০ বছর আগে জমিদাররা তাদের জমিতে এই ভবনটি করেন। এখন এটি পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড এলাকায় পড়েছে। এখন ভবনের ফাটল দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি হলে পানি জমে। সামান্য বাতাস এলেই ভয় হয়; কখন পুকুরে ভেঙে পড়ে। কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। জীবন হাতে নিয়ে আমরা মানুষের জন্য কাজ করছি।’
কেরোয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিনুর বেগম বলেন, ‘পরিষদের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ এবং প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তারা কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না এবং তাই কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়না।’
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) রাসেল ইকবাল বলেন, ‘কেরোয়া ইউনিয়নের ঝুঁকিপূর্ণ ভূমি ভবন পরিদর্শন করা হয়। খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’